
যত কাণ্ড যাদবপুরে। অতি-বাম ছাত্র সংগঠন আরএসএফ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত মাওবাদী নেতাদের নামে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত তাদের সম্মেলনের স্থানের নামকরণ করেছে বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, রেভোলিউশনারি স্টুডেন্ট ফ্রন্টের তিনদিন ব্যাপী সম্মেলন শুরু হয়েছিল ২৪ নভেম্বর। এটি চলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে।
আর এই সম্মেলনেই আরএসএফ-এর পক্ষ থেকে যাদবপুরের নাম প্রতীকীভাবে হিদমা নগর রাখা হয়। পাশাপাশি কলকাতাকে করা হয় কোটেশ্বর রাও নগর। এছাড়া বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামের নামকরণ করা হয় বাসবরাজু অডিটোরিয়াম।
প্রসঙ্গত, সিপিআই মাওবাদির কমান্ডার মাদভি হিদমা ১৮ নভেম্বর নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময়ে মারা যায়। এই লড়াই চলে অন্ধ্রপ্রদেশের আল্লুরি সীতরামাজু জলায়। ও দিকে মাওবাদী নেতা নামবালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু ছত্তিশগড়ের বস্তারে গুলির লড়াইতে প্রাণ হারায়।
আবার কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজি পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলে প্রাণ হারায় ২০১১ সালে। আর সেই তিনজনের নাম এ বারের সম্মেলনে ব্যবহার করেছে। এই প্রসঙ্গে আরএসএফ-এর সাধারণ সম্পাদক তথাগত রায়চৌধুরী বলেন, 'এই নামকরণটি ছিল প্রতীকী। এই সম্মেলনে এমন কোনও আলোচনা বা বিতর্ক হয়নি যা কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং দেশবিরোধী কার্যকলাপকে তুলে ধরে।"
তাঁর আরও দাবি, 'যারা কাজ করেছেন এবং দরিদ্র মানুষের সঙ্গে থেকেছেন, আরাম, উজ্জ্বল ক্যারিয়ার এবং নিরাপদ চাকরির আশা বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের আমাদের স্মরণ করা উচিত,'
রায়চৌধুরী দাবি করেন, যে বন, ভূমি ও জলের উপর আদিবাসী সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এটা জাতীয়তাবাদের চেতনার পরিপন্থী কিছু নয়।
তিনি আরও বলেন, 'কর্পোরেট এবং ধনীরা প্রাকৃতিক সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। কৃষক ও আদিবাসীদের বাস্তুচ্যুত করার প্রচেষ্টার করেছে। আমরা তার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।'
এই সম্মেলনে সংগ্রামী শ্রমিক মঞ্চ, সংগ্রামী কৃষক মঞ্চ এবং রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির জন্য কমিটিও এখানে উপস্থিত ছিল। তারা তিনজন ভয়ঙ্কর মাওবাদীর জন্য এক মুহূর্ত নীরবতা পালন করে। তাদের RSF 'শহিদ'ও মনে করেন।
যদিও এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরঞ্জিব ভট্টাচার্য। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, সব নিয়ম মেনেই সম্মেলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কনফারেন্সের ভিতর কী বিষয়ে কথা হয়েছে, সেটা তারা জানেন না বলেই খবর।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, আমরা এই বিষয়ে জানতে পেরেছি। ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয় সেটা দেখছি। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় বলে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা সম্ভব নয়।