বাঙালিদের মধ্যে আর উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই। মদ, ধূমপান করে বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে নিজেকে আঁতেল মনে করে। এটাই তাদের জীবনের লক্ষ্য। বর্তমানে কলকাতার বাঙালি সমাজকে ঠিক এভাবেই ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আর্থিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তথা অর্থনীতিবিদ সঞ্জীব সান্যাল। তার এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। তাদের কটাক্ষ, আধুনিক যুগের মীরজাফর। সঞ্জীব স্যান্যাল বাংলার কলঙ্ক বলে কটাক্ষ অধীরের।
অতিসম্প্রতি একটি পডকাস্টে বাংলার বর্তমান অবস্থা নিয়ে সঞ্জীব স্যান্যালকে প্রশ্ন করা হয়। তার জবাবে সঞ্জীব বলেন,''বর্তমানে উচ্চাকাঙ্ক্ষার দৈন্য দেখা যাচ্ছে বাঙালি সমাজে। তাদের জীবনের ইচ্ছা ইউনিয়ন নেতা হওয়া। আঁতেলদের আড্ডায় শামিল হওয়া আপনার উচ্চাকাঙ্ক্ষা। ধূমপান করে, ওল্ড মঙ্ক খেয়ে গোটা বিশ্বের ঘটনা নিয়ে মতামত দেন। এটাই একটা সমাজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা। মৃণাল সেনের ছবিই যদি আপনার উচ্চাকাঙ্ক্ষা হয়, তাহলে আর অভাব-অভিযোগ করবেন না'।
বিজেপির বাংলা বিরোধিতার মানসিকতা আরও একবার প্রকট হয়ে গেল বলে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছে তৃণমূল। তারা লিখেছে,'বিজেপির বাংলা বিরোধিতা সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছে। বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে উচ্চাকাঙ্খার দৈন্যতা বলে আক্রমণ করছেন আধুনিক যুগের মীরজাফর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সঞ্জীব স্যান্যাল। বিজেপির বাংলা বিরোধিতার পথে হেঁটে বাংলার সাংস্কৃতিক আইকন মৃণাল সেন ও সিটি অব জয় কলকাতার সংস্কৃতিকে উপহাস করেছেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী বাংলায় এলে তাঁকে ব্যাখ্যা দিতে হবে এই বক্তব্য তিনি সমর্থন করেন কিনা'।
সঞ্জীবের মন্তব্যের বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর কথায়,'এর থেকে অপমানজনক বক্তব্য আর কিছু হতে পারে না। উপাধি দেখে মনে হচ্ছে, তিনি বাঙালি। উনি বাংলার কলঙ্ক। তিনি বাংলার জন্য কী করেছেন? একজন বাঙালি হিসেবে এত বড় পদে গিয়ে বাংলাকে ছোট করার যে রুচি তৈরি হয়েছে, তা বাংলার সংস্কৃতির বিরোধী। আপনার মন্তব্যের নিন্দা করছি'।
তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষ কটাক্ষ করেন,'নিজের শিকড় ভুলে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে বাংলার সংস্কৃতি এবং ইতিহাস। কোন উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা বলছেন? বাংলা থেকেই ভারতের সবচেয়ে বেশি নোবেলজয়ী। কোনও রাজ্য ধারেকাছে নেই। দেশের অন্যান্য রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের প্রকল্প নকল করছে'।