ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পানীয় খাওয়ানো হয়েছিল। এক মনোবিদ তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া আইআইএম-কলকাতার ছাত্র জিজ্ঞাসাবাদে একথা স্বীকার করেছেন। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই ওই ওষুধ পানীয়র সঙ্গে মিশিয়েছিলেন। এমনটাই জানালেন কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক।
কী স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত?
তদন্তকারীদের সামনে অভিযুক্ত ছাত্র জানান, তিনি আইআইএম ক্যাম্পাস সংলগ্ন একটি ফার্মাসি থেকে ঘুমের ওষুধ কিনেছিলেন। এবং তা ঠান্ডা পানীয় ও জলের সঙ্গে মিশিয়ে তরুণীকে খাইয়েছিলেন। ঘটনার দিন ওই তরুণী তাঁর হস্টেলের ঘরে যান। এবং সেখানেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি, ঘটনার পর তিনি নিজে তাঁর এক বন্ধুকে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান বলেও পুলিশ সূত্রে দাবি।
পুলিশের বক্তব্যে অসঙ্গতির ইঙ্গিত
তবে এই স্বীকারোক্তির মধ্যেও একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ। কেন তিনি ঘুমের ওষুধ খাওয়ালেন, তার কোনও যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা অভিযুক্ত দিতে পারেননি। পুলিশের প্রশ্ন, কাউন্সেলিংয়ের জন্য আসা কোনও তরুণীর সঙ্গে এই ধরনের আচরণের নেপথ্যে কী উদ্দেশ্য ছিল, সে বিষয়ে অভিযুক্ত স্পষ্ট নন।
নির্যাতিতার পরিচয় ঘিরেও ধোঁয়াশা
ঘটনায় জটিলতা আরও বেড়েছে অভিযোগকারিণীর পরিচয় নিয়ে। তিনি নিজেকে মনোবিদ বলে দাবি করলেও, এখনো পর্যন্ত কোনও রেজিস্ট্রেশন নম্বর বা চেম্বারের প্রমাণপত্র দিতে পারেননি। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হওয়ার কোনও সার্টিফিকেটও নেই বলেই দাবি পুলিশের।
অভিযোগকারীর পরিবারের বক্তব্যেও অসংগতি
তদন্তে উঠে এসেছে, নির্যাতিতার বাবার বক্তব্যেও কিছু অমিল আছে। এমনকি তাঁরা কোনও চাপের মধ্যে পড়ে তাদের অবস্থান বদলেছেন কিনা, বা কোনও আর্থিক সমঝোতা হয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
SIT গঠন
এই মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে একটি ৯ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করেছে কলকাতা পুলিশ। তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন সাউথ ওয়েস্ট ডিভিশনের এক সহকারী কমিশনার। বর্তমানে অভিযুক্ত ছাত্র ১৯ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তার জেরা চলবে এবং নতুন তথ্য সামনে এলে গোটা ঘটনার প্রকৃতি আরও স্পষ্ট হতে পারে।