রাজ্যের জনসংখ্যার কাঠামো বদলে দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার। অভিযোগ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। তিনি বুধবার নির্বাচন কমিশনের অফিসে যান। বৈঠক করেন। তারপর সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, রোহিঙ্গা মুসলমানের সংখ্যা বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। বর্তমান রাজ্য সরকারের প্রশ্রয়ে তা হচ্ছে। সারা দেশের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি বলেও দাবি করেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গের রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাম যাতে ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায় সেজন্য সুপ্রিম কোর্টে মহুয়া মিত্রকে পাঠিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়েছেন। সেই মামলা গ্রহণ করেনি দেশের শীর্ষ আদালত। তারপরই রাজ্যের ভোটার তালিকায় জনসংখ্যার হার বেড়েছে বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। বাংলাদেশের আশপাশে থাকা জেলা ও এলাকাগুলোতে এই বৃদ্ধির হার তাৎপর্যপূর্ণ বলেও দাবি তাঁর।
শুভেন্দু বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ জাল আধার ও ভোটার কার্ডের কারখানায় পরিণত হয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে ২৪.৭৭ শতাংশ ভোটার বেড়েছে, মাথাভাঙা- ২১.৭৯, কোচবিহার উত্তর ২১.৫৯, কোচবিহার দক্ষিণ ১৯.৪৭, শীতলকুচি ২৪.৬২, দিনহাটা- ২৫.৯৩, তুফানগঞ্জ, কুমারগ্রামে ২১.১০, কালচিনি- ২৩.৩২। সেখানে জাতীয় বৃদ্ধি ৭ শতাংশ। কলকাতার পাশে রাজারহাট, নিউটাউন, কসবাতেও জনবিন্যাস বদলে গিয়েছে। ওই জায়গাগুলোতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ঢোকানো হয়েছে।'
শুভেন্দুর আরও দাবি, উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট, স্বরূপনগর, হিঙ্গলগঞ্জ, বাদুড়িয়া, মিনাখাঁয় ভোটার বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ১৮.২০ শতাংশ বেড়েছে ভোটার। সেই জেলার ক্যানিং, ভাঙড়, কুলতলি, গোসাবা, সাগর, বগরাহাট, মেটিয়াবুরুজের মতো এলাকার জনবিন্যাস বেড়েছে।
এদিন ধর্মতলায় সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, যদি অনুপ্রবেশ হয়ে থাকে তাহলে সেজন্য দায়ি কেন্দ্র। কারণ সীমান্তে বিএসএফ থাকে। তবে শুভেন্দু অধিকারীর পাল্টা অভিযোগ, ৫৪০ কিলোমিটার এলাকায় কোনও কাঁটাতার নেই। সেখানে ঘেরা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে জমি চেয়েছিল কেন্দ্র। তবে সেই জমি দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, 'আগে জমি দিন। তারপর তো অভিযোগ করবেন। জমি না দিয়ে কেন কেন্দ্রের উপর দায় চাপাচ্ছেন?'
শিশির বাজোরিয়া ও শঙ্কর ঘোষকে পাশে বসিয়ে শুভেন্দু আরও দাবি করেন, নির্বাচন কমিশনকে তাঁরা জানিয়ে এসেছেন বিহারে যদি রোহিঙ্গা বাদ যায় তাহলে এই বাংলা থেকেও রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাদ দিতে হবে। না হলে বিজেপি প্রতিবাদে নামবে।