যোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে ক্রমশ আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়াচ্ছেন চাকরিহারারা শিক্ষকরা। এসএসসি ভবনের সামনে চলছে ধরনা-অনশন। পাশাপাশি এদিন দুপুরে শিয়ালদহ থেকে রানি রাসমণি পর্যন্ত মিছিল করলেন চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। প্রসঙ্গতএসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায়ে চাকরিহারা শিক্ষকরা । তাঁদের দাবি, তাঁদেরকে অতি দ্রুত চক ডাস্টার ফিরিয়ে দিক সরকার । এই প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি কলকাতাতেও পথে নেমেছেন শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবারও চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন অব্যাহত ।
উল্লেখ্য, বুধবার কসবায় প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে পুলিশের হাতে বেধড়ক মার জুটেছিল চাকরিহারা শিক্ষকদের। বিক্ষোভরত চাকরিহারাদের পেটে-পিঠে লাথি মারা হয়। শুধু তাই নয়, বেধড়ক লাঠিপেটা করার অভিযোগ ওঠে পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে। বাদ যাননি মহিলারাও। পরে সাফাই দিতে গিয়ে পুলিশ কমিশনার ও রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছিলেন, পুলিশ সিরিয়াসলি ইনজিওরড, বাধ্য হয়ে অ্যাকশন নিয়েছিল। এরপর রাতভর এসএসসি (SSC) ভবনের সামনে প্রতিবাদ বিক্ষোভে বসেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার মহামিছিলের ডাকা দেন তাঁরা। সেইসঙ্গে আজ থেকে অনশনে বসেছেন চাকরিহারারা।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরের সামনে অনশনে বসেছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়েছে অনশন। জানানো হয়েছে, ২০১৬-র এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে পুলিশি লাঠিচার্জের প্রতিবাদও তাঁদের কর্মসূচিতে রয়েছে। নাগরিক সমাজকে তাঁদের আন্দোলনের পাশে থাকার আর্জি জানিয়েছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, অনশনে প্রথম বসছেন সারডাঙ্গা হাইস্কুলের শিক্ষক পঙ্কজ রায়। এরপর ধীরেধীরে আরও শিক্ষকরা তাতে যোগ দেবেন বলে জানানো হয়েছে শিক্ষকদের তরফে।
এদিন দুপুর ১২টায় চাকরিহারাদের একটি মিছিল শুরু হয় শিয়ালদহ থেকে। মিছিলটি ধর্মতলায় গিয়ে শেষ হয়। কালো ব্যাজ এবং ব্যান্ড পরে মিছিলে শামিল হয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। মিছিল থেকে কসবার ঘটনায় যুক্ত পুলিশকর্মীদের শাস্তির দাবিও তুলেছেন তাঁরা। যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে মিছিলে হাঁটছেন শিক্ষকেরা। ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশ্যে আনা এবং কসবাকাণ্ডের প্রতিবাদেই তাঁদের এই সিদ্ধান্ত। এদিকে মিছিলে হাঁটতে গিয়ে চোখের জন বাঁধ মানছে না অনেকেরই। চাকরিহারা এক শিক্ষিকা বলেন, 'কিছু বলার নেই, প্রতিবাদের ভাষা নেই, একটাই দাবি, প্রমাণপত্র পাবলিক করে দিক, যোগ্য অযোগ্য তালিকা সুপ্রিম কোর্টে পাঠান হোক , সমাজের মেরুদণ্ডে লাথি মারা হয়েছে।' চোখ জল নিয়ে ওই শিক্ষিকার প্রশ্ন, 'আমাদের কি এখানে থাকার কথা? বাচ্চারা মেসেজ করছে, আসছেন না কেন, কী উত্তর দেব? টাকা পয়সার প্রশ্নতো রয়েইছে, সঙ্গে ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্টও শেষ।' চাকরি হারা এক শিক্ষক বলেন, ' নিরস্ত্র শিক্ষকদের ওপর হাত তোলা হল কেন? প্রশ্ন রইল, এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমতা চাইতে হবে।'