স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ হাইকোর্ট দিয়েছিল, তা বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি সোমবার। এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। শুনানিতে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, যদি ওএমআর শিট না থাকে তাহলে কে যোগ্য আর কে অযোগ্য তা কীভাবে নির্ধারণ করা হবে?
বিচারপতি জানান, মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার। এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেয়, প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল করা হল। তারই বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার, এসএসসি। তাদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়, হাইকোর্টের এই রায়ে যেন স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট তাতে কর্ণপাত করেনি। প্রধান বিচারপতি পর্যবেক্ষণে জানান, ওএমআর শিট সব নষ্ট হয়েছে। তাহলে কে যোগ্য আর কে অযোগ্য প্রার্থী তা কীভাবে নির্ধারণ করা হবে? অর্থাৎ যার ভিত্তিতে এই নিয়োগ সেই শিটই তো নেই। নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তাহলে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা কীভাবে সম্ভব।
প্রধান বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, এত জনের চাকরি বাতিল এটা বড় সিদ্ধান্ত। তবে আদালতের কাছে কোনও পথ না থাকলে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। এটা বড় সিদ্ধান্ত কোনও সন্দেহ নেই। তবে কলকাতা হাইকোর্ট হয়তো পারেনি তাই অন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আসল OMR শিট নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তবে এত লোকের চাকরি গেল, তার যারা আসল সুবিধাভোগী তাদের দেখতে হবে।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, 'প্যানেলের বাইরে নিয়োগ করা হয়েছে। এটা তো সম্পূর্ণ জালিয়াতি।’ তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, বেআইনিভাবে নিয়োগ হয়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টর রায়ের ৮ নম্বর আদেশে স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টর রায়ে বলা হয়েছিল, সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি যাঁরা করেছিলেন, প্রয়োজনে তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা যাবে। রায়ের এই অংশটির উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট প্রায় ২৮০ পাতার রায়ে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করে। যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের ১২ শতাংশ সুদ সহ বেতন ফেরানোরও নির্দেশও দেওয়া হয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য।