আসন্ন ৪ পুরনিগম নিয়ে আগামী শনিবার বিশেষ বৈঠক ডাকল নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাইকোর্টের আজকের নির্দেশের প্রেক্ষিতে আগামী ২২ জানুয়ারি রাজ্যের চার পুরসভার ভোট প্রসঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশন আগামীকাল বিশেষ বৈঠক ডেকেছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে কমিশনের বৈঠক রয়েছে বলে খবর। এই বৈঠকের পরে পুরভোট নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানতে মুখ্যসচিবের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করবেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কমিশনার সৌরভ দাস। এর পরেই ওই চার পুরসভার ভোট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। খুব সম্ভবত রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু কমিশনের তরফে চার পুরসভার ভোট সম্ভবত দুসপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিশেষ বৈঠকে কমিশন
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে নির্বাচন কমিশনকে একগুচ্ছ বিষয়ে উত্তর দিতে বলা হয়। আদালতের তরফে জিজ্ঞাসা করা হয়, কোভিডের এই পরিস্থিতিতে কী ভোট ৪ বা ৬ সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে? যদি তা সম্ভব হয় তাহলে কমিশন তা আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জানিয়ে দিক। আদালতের নির্দেশের পরেই রাজ্যের সঙ্গে ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে তারপরেই আদালতে তা জানাতে চাইছে কমিশন। ফলে কমিশনের এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সব মহল।
মামলা হাইকোর্টে
প্রসঙ্গত,করোনা পরিস্থিতিতে ৪টি পুরনিগমে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার আর্জিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। গতকাল, বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশ মেনে রাজ্য নিজেদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা দিয়েছে সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোট নিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেছে দু'পক্ষই। রাজ্যের আইনজীবী সম্রাট সেন বলেন,''কমিশন দিনক্ষণ ঠিক করবে। রাজ্য সুপারিশ করতে পারে।'' ডিভিশন বেঞ্চ তখন জানায়,আপনারা বলছেন রাজ্য সুপারিশ করবে। কিন্তু কমিশন বলছে রাজ্য দিনক্ষণ ঠিক করে। আশ্চর্য এই আইন চালুর ২৯ বছর পর আদালতে রাজ্য এবং কমিশন আলাদা কথা বলছে। সম্রাট যুক্তি দেন, নির্বাচন ঘোষণার পর আর রাজ্যের হাতে নেই। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী পাল্টা বলেন,''ভোটের দিনক্ষণ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত এককভাবে কমিশন নিতে পারে না। রাজ্যের বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তারাই বিষয়টি দেখছে।'' সুপ্রিম কোর্টের একটি পুরনো মামলার রায় উল্লেখ করে নির্দেশনামায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বলেছে, দিনবদলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। কী সিদ্ধান্ত তারা নিল তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা জানাতে হবে।