ফের লেখিকা তসলিমা নাসরিনের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ভাইরাল। তিনি জানান, হিন্দু নন, সেই কারণে তাঁকে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু, দক্ষিণেশ্বরে মূর্তির সামনে তাঁকে দাঁড়াতে দেওয়া হয়েছিল। এই পোস্ট করার পর সেখানে কয়েকশো কমেন্ট পড়েছে। মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেম নেটিজেনরা।
তসলিমা ঠিক কী লিখেছেন, 'পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি আমি হিন্দু নই বলে। এর পর কলকাতার দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে একেবারে কালী মূর্তি যে ঘরে সে ঘরে আমাকে সসম্মানে ঢোকানো হয়েছিল। শুধু তাই নয়, কালীকে পরানো লাল বেনারসি শাড়িটি আমাকে উপহার দেওয়া হয়েছিল। সুগন্ধ লেগে ছিল শাড়িতে। শাড়িটি আমার এক কালী ভক্ত বৌদিকে দিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি যে কী খুশি হয়েছিলেন! হঠাৎই মনে পড়লো ঘটনাটি। কত জায়গায় যে আমার প্রবেশ নিষিদ্ধ, কোথাও আবার আমি গর্ভগৃহে আমন্ত্রিত। জীবনে কত রকম ভাল মন্দ জোয়ার ভাটা দেখেছি। জ্যাক দারিদা বড় পুরস্কার দিচ্ছেন, ওদিকে কুড়োলের কোপ মেরে সুস্থ মানুষের পা কেটে ফেললো অর্থলোভী ক্রিমিনাল। জীবনে সম্মান যেমন পেয়েছি, অসম্মানও পেয়েছি কম নয়।'
দেখে-শুনে নেটিজেনদের অনেকে বলছেন, জীবনে প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি নিয়ে বলতে গিয়েই লেখিকা আসলে দক্ষিণেশ্বর ও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রসঙ্গ তুলেছেন।
এদিকে তসলিমার পোস্টে নেটিজেনরা নানা রকম কমেন্ট করেছেন। কেউ তুলেছেন ধর্মের প্রসঙ্গ আবার কারও মতে, জগন্নাথ মন্দিরে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, তার যথার্থ কারণও আছে।
একজন যেমন লিখেছেন, 'পুরীর জগন্নাথ মন্দির ভক্তদের প্রবেশের ব্যাপারে বেশ কড়া। শুধু আপনি নন অনেক বিখ্যাত মানুষ, এমনকি স্বয়ং চৈতন্য মহাপ্রভুকে, গুরু নানককে সেখানে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছিল। ঈশ্বরের মন্দিরে যে কোনো মানুষের প্রবেশে বাধা দান অপরাধের সামিল।
তবে ঈশ্বরে বিশ্বাসী না হয়ে মন্দির, চার্চ, মসজিদ বা কাবায় না যাওয়াই উচিত বলে আমি মনে করি। শ্রদ্ধা না থাকলে সেখানে না যাওয়াই উচিত। অবশ্যই এটা আমার ব্যাক্তিগত মতামত।'
আবার আর একজন লিখেছেন, 'কারণ জগন্নাথদেব পুরুষ আর মা কালী নারী! পুরুষেরা তো সারাজীবনই মেয়েদের দাবিয়ে রেখেছে।'
তবে শুধু এটা নয়। কলকাতার দুর্গাপুজোরও প্রশংসা করেছেন তসলিমা। তিনি লিখেছেন, কলকাতায় দুর্গাপুজো তিনি ভালোবাসতেন আর্টের কারণে। ঠাকুরও দেখতে বেরোতেন। কোন কোন মণ্ডপের ঠাকুর তিনি দেখতেন তারও তালিকা দিয়েছেন।