কলকাতায় ট্রেলার লঞ্চ করতে এসে ঝামেলায় জড়ালেন 'দ্য বেঙ্গল ফাইলস'-এর পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। ‘দ্য বেঙ্গল ফাইল্স’-এর প্রচার-ঝলক দেখাতে শুক্রবার রাতে মুম্বই থেকে কলকাতায় আসেন পরিচালক। বিবেকের দাবি, শনিবার শহরের একটি পাঁচতারা হোটেলে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিচালক। পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করা হচ্ছে। এই নিয়ে এবার সোচ্চার হলেন কুণাল ঘোষ।
কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডলে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলেন, 'বিবেক অগ্নিহোত্রী নাটক করছেন। পরিচালকের তিনি নামেই, যা তৈরি করেন তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে। এতদিন গুজরাট ফাইলস করেননি কেন? গুজরাট দাঙ্গা দেখাননি কেন? বিলকিসের উপর যা হয়েছে তা নিয়ে ছবি করেননি কেন? কেন এমপি, ইউপি বা মণিপুর ফাইলস তৈরি করেননি?' তাঁর অভিযোগ, 'BJP-র স্বার্থে বাংলায় এসে কলুষিত করছেন। এঁকে আমেরিকার ধর্মপ্রচারক মরিস সেরুলোর মতো অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বাংলা থেকে বের করে দেওয়া উচিত। এটা গণতান্ত্রিক রাজ্য বলে সেটা করা হচ্ছে না।'
সত্যজিৎ রায়ের বাংলায় তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ কেন করা হচ্ছে? প্রশ্ন তুলেছিলেন বিবেক অগ্নিহোত্রী। তাঁকে পাল্টা কুণালের জবাব, 'সত্যজিৎ রায়ের বাংলা বলেই আপনি এখনও এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বিভেদকামী শক্তির হয়ে বাংলার বিরুদ্ধে কুৎসা করার সমস্ত প্ররোচনামূলক উপাদান ছড়াতে আপনার লজ্জা করছে না?' সরাসরি পরিচালককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে কুণাল বলেন, 'বিবেক অগ্নিহোত্রী, যদি ক্ষমতা থাকে গুজরাট, এমপি, ইউপি আর মণিপুর ফাইলস করে আসুন তারপর বেঙ্গল ফাইলস নিয়ে কথা বলবেন। বাংলার ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে সিনেমা বানান। নয়তো যদি কলুষিত করতে আসেন তবে বাংলা থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বের করে দেওয়া হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রয়েছে বলে উনি এখনও বাংলায় আছেন।'
BJP বাঙালিকে পরিকল্পিত ভাবে অপদস্থ করতে চাইছেন, বিবেক অগ্নিহোত্রী ওদেরই কাঠপুতুল বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
এদিকে, কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে মাঝপথেই দ্য বেঙ্গল ফাইলসের ট্রেলার বন্ধ করে দেয় কলকাতা পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় ল্যাপটপও। যার ফলে কলকাতায় দ্য বেঙ্গল ফাইলস-এর ট্রেলার আনুষ্ঠানিকভাবে লঞ্চ হয়নি।
পরিচালকের দাবি, রাজনৈতিক বাধার কারণে তা করা যায়নি। তিনি বলেন, 'কেন আমায় বাধা দেওয়া হচ্ছে বুঝতে পারছি না। কোনও কারণই খুঁজে পাচ্ছি না। এর আগে মাল্টিপ্লেক্সে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল।' যদিও হোটেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে তাদের তরফ থেকে ট্রেলার লঞ্চে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি। কলকাতা পুলিশের শীর্ষ অধিকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, 'এই ধরণের স্ক্রিনিং ইভেন্টের জন্য বিনোদনমূলক লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু এই ইভেন্টের আয়োজকরা কলকাতা পুরসভার থেকে কোনও বিনোদন লাইসেন্স নেননি। তারা অনুষ্ঠানটি আয়োজনের আগে স্থানীয় পুলিশকেও এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে অবহিত করেনি। আমরা অন্যান্য জায়গা থেকে অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি। তাই আয়োজকরা আমাদের কোনও লাইসেন্স দেখাতে না পারায় আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল।'