
২০০২ সালের ভোটার লিস্টের হার্ড কপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আপলোড করা তালিকার কোনও মিল নেই। একাধিক ভোটারের নাম বাদ পড়েছে কমিশনের তালিকা থেকে। এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কুণাল ঘোষ এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সাংবাদিক বৈঠক করে বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ তোলেন। এবার শুক্রবার প্রমাণ দিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হল দলের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে।
তৃণমূলের অভিযোগ, নটবাড়ি, নাথাভাঙা, অশোকনগর এবং বসিরহাট থেকে ভোটারদের নাম কমিশনের আপলোট করা তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। বসিরহাটের একটি বুথে ৮৫৯ নম্বর থেকে ৮৯২ নম্বর পর্যন্ত ভোটারদের নাম বাদ পড়েছে কমিশনের আপলোড করা তালিকা থেকে। অথচ এই সিরিয়াল নম্বরের ভোটারদের নাম ২০০২ সালের অরিজিনাল ভোটার লিস্টে রয়েছে। এমনটাই দাবি তৃণমূলের।
SIR-কে 'সায়লেন্ট ইনভিজিবল রিগিং' বলে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দিল্লিতে 'জনবিরোধী জমিদারি' চালানো হচ্ছে বলেও এদিন BJP সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে রাজ্য শাসকদল। রিভিশনের নাম করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার কৌশলকে শিল্পের স্তরে নিয়ে গিয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল। তৃণমূলের বক্তব্য, 'চুপ করা থাকার অর্থ এ জিনিস সহ্য করা হবে এমনটা নয়। ভোটাধিকার কারও দয়ার দান নয়। এটা সাংবিধানিক গ্যারান্টি। একজন ভোটারের নামও যদি বাদ পড়ে, দিল্লির নির্বাচন সদনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হবে। নাম কেটে দিয়ে ভোট চুরি করা যাবে বলে যারা ভেবে ফেলেছিলেন, তাদের জন্য এটা ওয়ার্নিং।'
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, কোচবিহার বিধানসভার নাটাবাড়ির বুথ নম্বর ২-এর পুরনো তালিকায় ছিল ৭১৭টি নাম। কিন্তু এখন কমিশনের সাইটে একই বুথের ২০০২ সালের তালিকায় দেখা যাচ্ছে মাত্র ১৪০টি নাম। ৭১৭ থেকে ১৪০ হয়ে গেল কীভাবে? বাকিরা গেল কোথায়? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। আরও উদাহরণ দিয়ে কুণাল বলেন, একাধিক জেলার বহু বুথেই একই গরমিল ধরা পড়েছে। মাথাভাঙার ৬০ নম্বর বুথের কথাও বলেছেন তিনি। সেখানে ২০০২ সালের তালিকায় ছিল ৮৪৬ জনের নাম। কমিশনের ওয়েসবসাইটে ২০০২ সালের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ৪১৬ জনের নাম রয়েছে। কমিশনের ওয়েবসাইটে ২০০২ সালের তালিকায় অশোকনগর বিধানসভার ৬১ নম্বর বুথের ৩৪৩ থেকে ৪১৪ নম্বর ক্রমিক সংখ্যার ভোটারের নাম নেই।
তৃণমূলের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল। তিনি বলেন,'কিছু লোক জানেন না যে ইসিআই ওয়েবসাইটটি এনআইসি দ্বারা হোস্ট করা হয়েছিল এবং এটি ভারত সরকারের অধীনে। ভারত সরকার সার্ভার আপগ্রেড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি করার জন্য আমরা অর্থ এবং সকলের অনুমোদন নিয়েছি। সব কিছু আপগ্রেড করা হবে। ২-৩ দিনের মধ্যে ট্রান্সফার প্রক্রিয়া করা হবে। ৫ নভেম্বর থেকে ফর্ম জমা দেওয়া শুরু হবে। তার আগে আপগ্রেড করা হবে।'