Advertisement

Abhishek Banerjee: 'যারা যোগ্য তাঁদেরই পুরস্কৃত করা হয়েছে', TMC-র সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে অভিষেক

আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে রাজ্যের শাসকদলে সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। গত শুক্রবার এই বিষয়ে সিলমোহর পড়েছে। ১৬ মে সব মিলিয়ে প্রায় ১৮টি সাংগঠনিক জেলায় রদবদল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ভাবিকভাবেই সেখানে দলের কারও কারও গুরুত্ব বেড়েছে। আবার ক্ষমতা খুইয়েছেন কেউ কেউ। পুরো বিষয়টাই পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে হয়েছে বলে সোমবার দাবি করলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

TMC-র  সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে ইঙ্গিতবাহী অভিষেকTMC-র সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে ইঙ্গিতবাহী অভিষেক
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 19 May 2025,
  • अपडेटेड 2:32 PM IST

আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে  রাজ্যের শাসকদলে সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। গত শুক্রবার এই বিষয়ে সিলমোহর পড়েছে। ১৬ মে সব মিলিয়ে প্রায় ১৮টি সাংগঠনিক জেলায় রদবদল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ভাবিকভাবেই সেখানে দলের কারও কারও গুরুত্ব বেড়েছে। আবার ক্ষমতা খুইয়েছেন কেউ কেউ। পুরো বিষয়টাই পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে হয়েছে বলে সোমবার দাবি করলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার দিল্লি যাওয়ার আগে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'যাঁরা যোগ্য, যাঁরা পরিশ্রম করেছেন, তাঁদের দল পুরস্কৃত করেছে। এমনটা হয়েছে যে কেউ প্রচুর পরিশ্রম করেছেন, অথচ সেই জায়গায় আমরা হেরে গিয়েছি। কিন্তু তাঁদের পরিশ্রমের তো বিকল্প হয় না। তাই দল সেসব ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কাউকে জেলা স্তর থেকে রাজ্য স্তরে আনা হয়েছে। কাউকে নতুন পদে আনা হয়েছে।' 

গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল এবং সারা বছরের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড, দু’টি বিষয় পর্যালোচনার ভিত্তিতে দল পরিশ্রমীদের পুরস্কৃত করেছে। যাতে অনুমোদন রয়েছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন অভিযেক। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের স্পষ্ট বক্তব্য,   ‘রদবদল দলের সিদ্ধান্ত। আমরা বিভিন্ন স্তরে পর্যালোচনা করে এবং দলের মধ্যে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তগুলি নিয়েছি। ব্লক থেকে জেলা স্তরে সকলের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। যেখানে যা পরিবর্তন হয়েছে, দলনেত্রীর অনুমোদনে হয়েছে।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পারফরম্যান্সই যে রদবদলের অন্যতম মাপকাঠি হবে, সে কথা একাধিক বার বলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জোড়াফুল শিবিরে রদবদলে সে কথাই যে মান্যতা পেয়েছে, তা এক রকম পরিষ্কার। ২০২৪–এ ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে অভিষেক ঘোষণা করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল–সহ একাধিক মাপকাঠি সামনে রেখে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরে রদবদল করা হবে। গত বছর সেপ্টেম্বরে অভিষেক জানান যে, সংগঠনে রদবদলের খসড়া প্রস্তাব তিনি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দিয়েছেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের নেতা–কর্মীদের সভায় অভিষেক ফের জানান যে, রদবদল আসন্ন। জেলায় জেলায় সংগঠনে কোথায় ফাঁকফোকর রয়েছে, নির্দিষ্ট বিধানসভার কোন কোন বুথে সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে—গত ১৫ মার্চ দলের ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক সে নিয়ে ফের বিশদে জানান।

Advertisement

 দেখা গিয়েছে, লোকসভায় তৃণমূল হেরে যাওয়া অনেক আসনে জয় ছিনিয়ে এনেছে। কোথাও কোথাও আবার জেতা আসন হেরে গিয়েছে। সাম্প্রতিক রদবদলেও তারই প্রভাব পড়েছে। অভিষেকের কথায়, ‘কে কোথায় থাকবেন না থাকবেন, পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে তা ঠিক করা হয়েছে। যাঁরা সাংসদ হয়ে গিয়েছেন, তাঁদের জেলা স্তর থেকে সরিয়ে রাজ্য স্তরে আনা হয়েছে। কেউ সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন, কেউ সহ-সভাপতি বা সম্পাদকের পদ পেয়েছেন। অনেককে আবার ব্লক স্তর থেকে জেলা স্তরে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। দলে সকলের ভূমিকাই পাল্টেছে।’

উল্লেখ্য এবার তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলের মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, বীরভূম ও কলকাতা উত্তরের পরিবর্তন। বীরভূমে সংগঠন চালানোর ভার সম্পূর্ণভাবে দেওয়া হয়েছে কোর কমিটিকে। অনুব্রত মণ্ডল-সহ ৭ সদস্যের কোর কমিটিই সব কর্মসূচি করবে। সেই নির্দেশ মেনে রবিবার কোর কমিটির প্রথম বৈঠকও হয়েছে। কলকাতা উত্তরেও বীরভূমের ধাঁচে তৈরি হয়েছে কোর কমিটি। তাতে রয়েছেন ৯ সদস্য। এনিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'দেখুন, যেখানে যা পরিবর্তন করা হয়েছে, সবটাই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে এবং সকলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে। মাস কয়েক আগে নেতাজি ইন্ডোরে দলের মহা সমাবেশে যে আলোচনা হয়েছিল, সেইমতোই সব করা হয়েছে। বীরভূম যেমন কোর কমিটির হাতে ছিল, অনুব্রত মণ্ডলও রয়েছেন তাতে। আর কলকাতা উত্তরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেয়ারম্যান রেখে কোর কমিটি তৈরি হয়েছে। ৭ জন ছিলেন, তার সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনের দুই নেতা – স্বপন সমাদ্দার ও জীবন সাহাকে যুক্ত করা হয়েছে। সবে ৪৮ ঘণ্টা হল এসব রদবদল হয়েছে। তারাও বৈঠক করবেন।'

শুধু লোকসভায় জয়ের ভিত্তিতে নয়, সার্বিক ভাবে পরিশ্রমের দামও দিয়েছে তৃণমূল শিবির। বিষয়টি নিয়ে  অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যাঁরা হয়তো খুব চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সেই কেন্দ্রে আমরা আশানুরূপ ফল করতে পারিনি। তবে তাঁদের পরিশ্রমে খামতি ছিল না। তাঁদেরও পুরস্কৃত করা হয়েছে। যাঁরা দলের জন্য খেটেছেন, প্রাণপাত করেছেন, সারা বছর মানুষের কাছে যাঁরা সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলিকে পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদের সকলকে পুরস্কৃত করার চেষ্টা করেছে দল।’ কারও কারও পদ যাওয়ায়  ক্ষুব্ধ, তাঁরা দলে গুরুত্ব কমল বলে মনে করছেন। এনিয়ে  প্রশ্নের জবাবে অভিষেকের বন্তব্য, 'যাঁরা দলের কাজে অবহেলা করেছেন, তাঁদের গুরুত্ব তো কমবেই। তবে সবাই মিলেই দলের কাজ করতে হবে। এখন ভাবলে হবে না, কে বাদ পড়ল আর কার গুরুত্ব বাড়ল।'

Read more!
Advertisement
Advertisement