আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। ঘর গোছাতে এখন থেকেই ময়দানে নেমে পড়েছে সব পক্ষ। কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও। এই আবহে ঘাসফুল শিবির সমস্ত বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে বুথ স্তরের কর্মীদের উদ্দেশে সার্কুলার জারি করল। তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এই সার্কুলার জারি করেছেন। সেখানে লেখা হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে কিছু ব্যক্তি ভোটারদের বাড়ি যাচ্ছে। তারা কোথাও মশলা, কোথাও আবার অন্যান্য সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করে পরিবর্তে তাঁদের নাম, ফোন নম্বর ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করছে।
এই সার্কুলারে যা আছে তাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। সার্কুলার নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। চিন্তার ভাঁজ শাসক দলের নেতাদের কপালে। কারণ সক্রিয় হয়ে উঠেছে একদল ‘কুচক্রী’। তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের নাম, ফোন নম্বর ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ। বিনিময়ে ভোটারদের হলুদগুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়োর মতো মশলাপাতি এবং অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দিচ্ছে! দলীয় সূত্রে খবর, ‘কুচক্রী’দের এই ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করে সার্কুলার জারি করেছে শাসকদল তৃণমূল।
ওই সার্কুলারে ঠিক কী লেখা হয়েছে?
দলীয় নেতাদের বলা দেওয়া হয়েছে, অঞ্চলের দিকে কড়া নজর রাখুন এবং সর্বস্তরের বুথকর্মীদের নিয়ে মিটিং করে সকলকে সচেতন করুন। প্রয়োজনে এদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতেও বলা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস যে সার্কুলার জারি করেছে তাতে লেখা আছে , স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে কিছু কুচক্রী ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। আর সেখানে গিয়ে কোথাও মশলা, আবার কোথাও অন্যান্য সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করার পরিবর্তে তাদের নাম, ফোন নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করছে। এসবের পিছনে বিশাল চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র রয়েছে। তাই অবিলম্বে আপনার/আপনাদের অঞ্চলে লক্ষ্য রাখুন এবং সর্বস্তরের বুথ কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে সকলকে সচেতন এবং সতর্ক করুন। কয়েকটি এজেন্সি এখন ময়দানে নেমে পড়েছে। বুথভিত্তিক ভোটারদের খবর সংগ্রহ করছে। এসবের পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এছাড়া এই জনৈক ব্যক্তিরা ভোটারদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও ঢুকে যাচ্ছে। এদের সম্পর্কে দলের নেতাদের সার্কুলার পাঠিয়ে সমস্ত খবর নিতে বলা হয়েছে। এমন কিছু বাংলার ভোটাররা দেখতে পেলে সঙ্গে সঙ্গেই এফআইআর করতে এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানাতেও বলা হয়েছে।
এই ব্যক্তিরা কোনও কোনও ক্ষেত্রে তৃণমূলের বুথ এবং অঞ্চলের নেতাদের কাছেও যাচ্ছেন বলে খবর। নানা অছিলায় তাঁদের থেকেও তথ্য সংগ্রহ করছেন। জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহলের বিনাপুর এমন একটি ঘটনার পরেই সতর্ক হয় শাসকদল। তারপরেই এই সার্কুলার জারি করা হয়েছে। ভুয়ো পরিচয় দিয়ে তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে ইতিমধ্যে বাংলার বিভিন্ন জেলায় ১৬টি এফআইআর দায়ের হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। শাসকদলের এই সার্কুলার নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। প্রশ্ন উঠছে, এরা কারা? এই পরিস্থিতিতে প্রধান বিরোধী দল বিজেপিই ষড়যন্ত্র করে এ ভাবে তথ্য হাতানোর চেষ্টা করছে বলে মনে করছে শাসক শিবির। প্রসঙ্গত, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আর বেশি বাকি নেই। এই আবহে এমন ঘটনা ঘটছে খবর পেয়ে এখন থেকেই দলের সমস্ত কর্মীর কাছে বার্তা পাঠিয়ে সচেতন করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।