তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে সম্মুখ সমরে মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। প্রয়োজনে নতুন দল গড়বেন তিনি। তাঁর কাছে প্রমাণ রয়েছে, তৃণমূলের কোন কোন নেতা দলের নাম ভাঙিয়ে টাকা তোলেন। শোকজের চিঠি পাওয়ার পর এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন হুমায়ুন। তাঁর সাফ কথা,'দুর্নীতির কাছে মাথা নত করব না।'
ঘটনার সূত্রপাত, হুমায়ুনের একের পর এক মন্তব্য ঘিরে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই তিনি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধে জড়ান। ভোটের ফল প্রকাশের পর আবার পঞ্চায়েতে হিংসা নিয়ে সরব হন। যা মোটেও ভালোভাবে নেয়নি তৃণমূল নেতৃত্ব। ২০২১ সালে ভরতপুর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার পর, হুয়ায়ুনকে বহিরাগত বলে আক্রমণ করেছিল দলেরই একাংশ। হুমায়ুনের অভিযোগ, সেই সময় থেকে রাজ্য নেতৃত্বকে একাধিকবার এই নিয়ে অভিযোগ করা হলেও কেউ তাঁর কথায় কর্ণপাত করেনি। বরং স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তাঁকে কোণঠাসা করতে শুরু করে।
সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হুমায়ুনের কাজের সমালোচনা করেন। তিনি হুমায়ুনের নাম না করলেও তাঁর কাজকর্মকে যে সমর্থন করছেন না, সেটা বুঝিয়ে দেন। তারপরই চিঠি যায় হুমায়ুনের কাছে। সেই চিঠির সাতদিনের মধ্যে উত্তর চেয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
এই প্রসঙ্গে হুমায়ুন কবীর বলেন, 'দল আমাকে আগেও ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছিল। আমি ফের দলে যোগ দিই। ভরতপুরে যখন আমাকে দাঁড় করানো হয়, তখন অনেকে আমাকে বহিরাগত বলেছিল। প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ ঘোষণা করে। সেই পরিস্থিতির মধ্যেও আমি জিতে দেখিয়েছিলাম। আমার পাশের বিধানসভা কেন্দ্র কান্দিতে আমার দলেরই বিধায়ক অপূর্ব সরকারের হাতে সব ক্ষমতা রয়েছে। অথচ আমার বিধানসভা কেন্দ্রে সব ক্ষমতা ব্লক সভাপতিদের হাতে। আমি এনিয়ে অনেকবার চিঠি লিখেছি। এখনও রাজ্য নেতৃত্ব কোনও পদক্ষেপ করেনি। আমাকে অসম্মান করা হয়। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে যা প্রাপ্য তার দাবি করা কি অন্যায়। আমি এমন অনেককে চিনি আমারই দলের যারা তোলাবাজি করে। দলের নাম করে টাকা তোলে। সেই সব প্রমাণ আছে। আমি কোনও দুর্নীতি করি না।'
এরপরই হুমায়ুনের সংযোজন, 'আমি দলে থেকে কোনওদিন অন্যায় করিনি। যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির আবেদন জানিয়েছি। এরপরও দল যদি ব্যবস্থা না নেয় তাদের বিরুদ্ধে তাহলে আমাকেও ভাবতে হবে। আমি মাথা নোয়াব না। প্রয়োজনে নতুন দল গড়ব। তবে সেটা সময় বলবে। এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।'