কুম্ভমেলা নিয়ে এবার কল্যাণের নিশানায় যোগী সরকার। যোগী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূল সাংসদ বলেন,'চূড়ান্ত অব্যবস্থার জন্য মহাকুম্ভে এত মৃত্যু। বাংলায় কিছু হলেই কমিশন পাঠানো হয়। মানবাধিকার কমিশন, মহিলা কমিশন কী করছে'। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'মহাকুম্ভ আমি নাই বা বললাম। ওটা এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গেছে।' মহাকুম্ভে বিপর্যয় এবং পুণ্য়ার্থীদের মৃত্য়ু নিয়ে, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মন্তব্য় রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলেছে! যা নিয়ে একযোগে আক্রমণে নেমেছেন যোগী আদিত্য়নাথ থেকে শিবরাজ সিং চৌহানের মতো নেতারা! এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুর মেলালেন কল্যাণও।
তৃণমূল সাংসদ বলেন, 'কুম্ভের জল একেবারে দূষিত। কেন সবাই পদক্ষেপ নিচ্ছেন না? কুম্ভ মেলা ঘিরে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তার উত্তর চাই।' প্রসঙ্গত, মৌনী অমাবস্যার দিন মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত্যু হয় একাধিক মানুষের। এছাড়াও কুম্ভ যাওয়ার পথে দিল্লির রেল স্টেশনেও ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা। সেই প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, 'রেলমন্ত্রী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর অযোগ্যতার জন্য এত মানুষের প্রাণ গেল। পশ্চিমবঙ্গে কিছু হলেই বিভিন্ন কমিশন ঢুকে যায়। যেহেতু ওখানে বিজেপি সরকার রয়েছে তাই মানবাধিকার কমিশন কিছু করবে না?' তৃণমূল সাংসদ ক্ষোভ উগরে এও বলেন, 'ডবল ইঞ্জিন সরকার যখন কিছি করে তখন কেউ কিছু করতে ভয় পায়। সাংসদ কুম্ভ মেলায় এত মানুষের মৃত্যু হল কেন তার জবাব চেয়েছেন যোগী আদিত্যনাথের সরকারের কাছ থেকে।'
প্রসঙ্গত, ১৪৪ বছর পর প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভের আয়োজন। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে রেকর্ড সংখ্যার পুণ্যার্থী প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই মহাকুম্ভে পুম্যস্নান সেরেছেন প্রায় ৫০ কোটি মানুষ। এই পুণ্যস্নান চলবে মহাশিবরাত্রি পর্যন্ত। এরই মধ্যে কয়েকবার দুর্ঘটনাও ঘটে গিয়েছে কুম্ভে। মৌনী অমাবস্যায় পুণ্যার্থীদের ভিড়ে ব্যারিকেড ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল একাধিক পুণ্যার্থীর। যার পরই মহাকুম্ভকে মৃত্যুকুম্ভ বলে কটাক্ষ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার এই নিয়ে সুর চড়ালেন কল্যাণও। তিনি বলেন, কুম্ভ মেলায় উত্তরপ্রদেশ সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। তাই এত মানুষের প্রাণ গিয়েছে। যেখানে কেবল গঙ্গা স্নান করছে সেখানেই নয়, তার আগে ৩০০ কিমি এপাশে ওপাশে গাড়ি চলছে না। ঘন্টার পর ঘন্টা মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে। ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কোথায়? প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলসাংসদ।
এরপরই সাংসদ জানান যে কুম্ভতে যে ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে তাঁরা পার্লামেন্টে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁদের তরফ থেকে নিরপেক্ষ বিচারের দাবিও তোলা হয়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, জল একেবারে দুষিত। কেন সবাই পদক্ষেপ নিচ্ছে না? কুম্ভ মেলা নিয়ে যে বিতর্ক হয়েছে তার উত্তর কিন্তু চাই। সাংসদ বলেন, পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড কী করছে? সরকার, ডিএম কী করছে? পশ্চিমবঙ্গে কিছু হলেই বিভিন্ন কমিশন ঢুকে যায়। যেহেতু ওখানে বিজেপির সরকার রয়েছে তাই হিউম্যান রাইটস কমিশন কিছু করবে না? শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ বলেন, শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির কাউকেই পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কোনও পাত্তাই দেয় না। কয়েকটা লোক আছে, নাচে, ঢাক-ঢোল পেটায়। বাংলার মানুষের কাছে ওদের কোনও দাম নেই।
সংবাদদাতা-ভোলানাথ সাহা