দুর্গাপুরে মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াকে 'গণধর্ষণের' ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,'বিভিন্ন রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যেখানে পড়তে আসে, তাদেরও আমি অনুরোধ করব রাতে না বেরোতে। কারণ পুলিশ তো জানতে পারে না, কে কখন রাতে বেরিয়ে যাচ্ছে।' তাঁর এই মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস একযোগে বলেছে, মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশ মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে পারেন না। তাই ঘরবন্দী থাকার নিদান দিচ্ছেন। এবার সেই বিতর্কে নাম জুড়ল বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের। তিনিও বললেন, 'মহিলাদেরও এত রাতে কলেজ থেকে বেরোনো উচিত নয়।'
সোমবার সৌগত রায় বলেন, 'বাংলাতে মহিলারা নিরাপদ। অন্য রাজ্যের তুলনায় মহিলাদের নিরাপত্তা এই রাজ্যে অনেক বেশি। যেগুলো ঘটে সেগুলো বিরল ঘটনা। আরজি কর ঘটনার একবছর হয়েছে। আরও একটা ঘটনা সামনে এল। দুটোই দুর্ভাগ্যজনক। তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এগুলো বন্ধ হওয়া উচিত।'
তারপরই সৌগতর সংযোজন, 'মহিলাদেরও এত রাতে কলেজ থেকে বেরোনো উচিত না। কারণ পুলিশ সব জায়গায় থাকতে পারে না। সেজন্য সাবধান হওয়া জরুরি। ইঞ্চি ইঞ্চিতে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। সব রাস্তায় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন অসম্ভব। কোনও ঘটনার পর পুলিশ পদক্ষেপ করতে পারে। বড় কোনও রাস্তায় সুরক্ষা দিতে পারে। মহিলাদেরও সাবধান হওয়া দরকার।'
দুর্গাপুরের শোভাপুর এলাকায় একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী নির্যাতিতা। শুক্রবার রাতে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েছিলেন সহপাঠীদের সঙ্গে। প্রথমে তাঁকে ক্যাম্পাসের বাইরে হেনস্থা করা হয়। পরে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫ জন গ্রেফতার হয়েছে।
এই ঘটনা সামনে আসার পর ক্ষোভ উগরে দেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা। রাজ্য সরকার মেয়েদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ বলে রাস্তায় নামে বাম ও বিজেপির মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'পুলিশ তো বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বসে থাকবে না। কেউ যদি রাত সাড়ে ১২টায় বেরিয়ে কোথাও যায়। ঘটনাটা নিন্দনীয়। যে যেখানে খুশি যেতে পারে। সেটা তার অধিকার। কী ভাবে রাত সাড়ে ১২টায় বেরোল? আমরা দুই থেকে তিন মাসে চার্জশিট দিয়ে থাকি।'
যদিও সূত্রের খবর নির্যাতিতা যে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন তাতে উল্লেখ, রাত ৮টা থেকে ৮টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে গোটা ঘটনা ঘটেছে। প্রথমে তিন জন মিলে তরুণীকে ঘিরে ধরেন। পরে আরও দু’জন আসে। তারপর গণধর্ষণ করে।