
রাজ্য জুড়ে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (SIR) কাজ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকেই বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন বুথ স্তরের অফিসারেরা (BLO)। এদিকে । এসআইআর-এর বিরোধিতায় মঙ্গলবার মেগা মিছিল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পথে নামতে দেখা গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দুজনকেই। আর সেই মিছিল থেকেই ‘অভয়বার্তা’ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেছেন, ‘দিদি এখনও আছে! ভয় পাবেন না। ওরা কারও নাম বাদ দিতে পারবে না।’ মমতা আরও বলেছেন, ‘দরকারে থালাবাটি বেচে আমরা আপনাদের সাহায্য করব। যাঁদের কোনও কাগজ নেই, তাঁরা তৃণমূলের ক্যাম্পে যান। আমাদের কর্মীরা সমন্বয় করে সব তৈরি করার বন্দোবস্ত করবে।’ এদিকে দলনেত্রীর আশ্বাসের পর এবার, এসআইআরের বিরুদ্ধে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে প্রস্তাব আনতে চাইছে রাজ্য়ের শাসক শিবির ৷ দলের অন্দরে এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কায় রাজ্যে একে পর এক মানুষ আত্মহত্যা করছেন বলে অভিযোগ তৃণমূল শিবিরের। তাই এ বার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে এসআইআরের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনে SIR–এর বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার সম্ভাবনা রয়েছে শাসক শিবিরের। সূত্রের খবর, এই অধিবেশনেই SIR–এর বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনতে পারে ণমূল কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনই বর্তমান বিধানসভার শেষ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন হতে চলেছে । ফেব্রুয়ারি মাসে কেবল অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করা হবে। তাই রাজনৈতিক দিক থেকে এই অধিবেশনের গুরুত্ব অনেকটাই। তৃণমূল পরিষদীয় দলের পরিকল্পনা এই অধিবেশনকেই হাতিয়ার করে এসআইআর ইস্যুতে কেন্দ্রের শাসক দল ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হওয়া এবং রাজ্যের ভোটারদের বিশেষ বার্তা দেওয়া। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এই ইস্যুতে বিজেপিকে কোণঠাসা করবে তৃণমূল ৷ বিধানসভার অধিবেশন আয়োজন করে সেই কাজটাই আরও এগিয়ে রাখতে চায় তারা ৷
তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির ইঙ্গিতেই নির্বাচন কমিশন রাজ্যে এই ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধনী’ প্রক্রিয়া চালু করেছে। এতে সাধারণ ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়া এবং নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কায় আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে রাজ্যজুড়ে। আরও গুরুতর অভিযোগ, এই আতঙ্কেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ আত্মহত্যা করছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও সম্প্রতি বলেছেন, এসআইআরের নামে বাংলার মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে, কিন্তু দিদি আছে, ভয় পাবেন না। তৃণমূলের পরিষদীয় দলও চায়, এবার বিধানসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব এনে কমিশন ও বিজেপির বিরুদ্ধে অবস্থান জানাতে। তবে তৃণমূল এখনও প্রস্তাবের খসড়া নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানায়নি। দলের ভেতরে আলোচনায় বলা হচ্ছে, সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সবুজ সংকেত পেলেই প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে তোলা হবে শীতকালীন অধিবেশনে। তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত দলীয় নেতৃত্ব প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে কেরল বিধানসভায়য় এসআইআরের বিরুদ্ধে অনুরূপ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।