ইতিমধ্যেই যাত্রা শুরু করেছে শিয়ালদা-রানাঘাট এসি লোকাল ট্রেন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই লোকাল ট্রেন নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে প্রথম থেকেই তুমুল আগ্রহ ছিল। পরিষেবা শুরুর দিন থেকেই থিকথিকে ভিড় দেখা গিয়েছে এই এসি লোকালে। সঙ্গে বেড়েছে ব্লগারদের আনাগোনাও। এসি লোকালের অন্দরসজ্জা ক্যামেরাবন্দি করে নেটপাড়ায় আরও একটু বেশি জনপ্রিয় হওয়ার লক্ষ্যে নিত্যদিনই ব্লগারদের উঠে পড়তে দেখা যাচ্ছে এই এসি লোকাল ট্রেনে। তেমনই একজন ব্লগারের সঙ্গে ঘটে গেল ভয়ঙ্কর ঘটনা। এসি ট্রেনের ছবি তুলতে গিয়ে দমবন্ধ হয়ে যাচ্ছিলেন এই ব্লগার। ঠিক কী ঘটেছিল?
রানাঘাট থেকে এসি লোকাল ট্রেন শিয়ালদা স্টেশনের দিকে ঢোকার পর সেটিকে কারশেডে নিয়ে যাওয়া হয়। নিয়ম না জেনেই সে সময়ে ট্রেনে উঠে পড়েছিলেন আরিয়ারূপ নামে এক ইউটিউবার। কিছুক্ষণের মধ্যেই এসি লোকাল ট্রেনের দরজা ‘লক’ হয়ে যায়। বন্ধ করে দেওয়া হয় এসিও। কারণ নিয়ম মতো ট্রেন কারশেডে নিয়ে যাওয়ার সময় তেমনটাই করা হয়। এরপরেই কামরায় দমবন্ধ পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই যুবক। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে দমবন্ধ হয়ে প্রাণহানি হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল বলে দাবি করেন আরিয়ারূপ। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি bangla.aajtak.in.
তবে এই ভাইরাল ভিডিও নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। সংবাদমাধ্যমে রেল কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, প্রথমত ট্রেন প্রান্তিক স্টেশনে ঢোকার পরে কারশেডে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সেই ট্রেনে ওঠা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। রেলের তরফে ঘোষণাও করে দেওয়া হয়, ট্রেন থেকে সকল যাত্রীদের নেমে যাওয়ার জন্য। পাশাপাশি এই ঘটনা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি বলেও দাবি করা হয়েছে রেলের তরফে। তাদের রেকর্ডে রেকর্ডে এমন কিছু নেই বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। রেলের পক্ষ থেকে এই ধরনের ঘটনা নিয়ে সতর্ক থাকা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কারশেডে যাওয়া ট্রেনে যাতে কেউ না ওঠে তা নিশ্চিত করা হবে। একইসঙ্গে রেল পুলিশকেও এ ব্যাপারে সতর্ক করা হবে। তবে কাজটি যে সম্পূর্ণ বেআইনি, তা স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছে রেল।
ওই ইউটিউবার নিজের ভিডিওতে আরও দাবি করেন, এসি লোকাল ট্রেন শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছয়। নির্দিষ্ট সময় পরে মাইকে ঘোষণা করেই ট্রেনটিকে কারশেডে পাঠানো হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয় দরজা। এসিও বন্ধ করা হয়। দমবন্ধ পরিস্থিতিতে অনেকেই অসুস্থ বোধ করেন। রেলের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করা হয়। কাচের জানলা দিয়ে বাইরের যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। ২০ মিনিট ধরে বন্ধ কোচের ভিতরেই আটকে ছিলেন সকলে।
শিয়ালদা ও রানাঘাটের মধ্যে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য চালু হওয়া এই এসি লোকাল প্রতিদিন সকাল ৮.২৯ মিনিটে রানাঘাট থেকে ছাড়ে। শিয়ালদায় পৌঁছবে সকাল ১০.১০ মিনিটে। সন্ধ্যার লোকালটি শিয়ালদা থেকে ছাড়ে ৬.৫০ মিনিটে। রানাঘাট পৌঁছয় রাত ৮.৩২ মিনিটে। ট্রেন থামে দাঁড়ায় বিধাননগর, দমদম, সোদপুর, খড়দহ, ব্যারাকপুর, নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া, কল্যাণী এবং চাকদহ স্টেশনে।