প্রতি বছর নিজের বাড়িতে ধুমধাম করে কালীপুজো আয়োজন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিষ্ঠাভরে এই পুজো নিজে বসে থেকে তদারকি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে পুলিশ কার্যালয়ে বিশ্বকর্মা পুজোয় অংশ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। । মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর বাসভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা বসেন এই কার্যালয়ে। এদিন বিশ্বকর্মা পুজো হয় সেখানে। মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সেখানে পুজো দেখলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মহিলা পুলিশকর্মীরাও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন— 'কালীঘাটে আমার বাড়ির পাশে পুলিশের অফিসে পুলিশ আজ বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করেছে। আমি ওদের সঙ্গে ছিলাম। কয়েকটি ছবি শেয়ার করে নিলাম।'
প্রসঙ্গত, বুধবার তৃণমূল ভবনেও বিশ্বকর্মা পুজো হয়েছে। সেখানে পুজো করেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এবার বিশ্বকর্মা পুজোয় সরকারি ছুটিও ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্মান জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত। পুজোর সকালে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ফের সেকথা সকলকে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই জানালেন বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা।
এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘সকলকে জানাই বিশ্বকর্মা পুজোর আন্তরিক শুভেচ্ছা। এবারে আমরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্মান জানিয়ে বিশ্বকর্মা পুজোতে রাজ্য সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছি।’
মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, বিশ্বকর্মা পুজো থেকেই আসলে দুর্গাপুজোর উৎসব শুরু হয়ে যায়। মঙ্গলবার এসএসকেএমে উডবার্ন ওয়ার্ডের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনেও সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো উদ্বোধন শুরু করতে পারেন বলে পুলিশসূত্রে খবর।
সম্প্রতি ভিনরাজ্যে গিয়ে বাংলায় কথা বলায় শ্রমিকদের হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফিরে আসার কথা বলেছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের পুনর্বাসনে 'শ্রমশ্রী' প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রকল্পের আওতাধীন পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্য়ে ফেরার পর যতদিন না কাজের সুযোগ পাচ্ছেন ততদিন প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। এছাড়াও স্বাস্থ্যসাথী-সহ রাজ্যের পরিষেবামূলক প্রকল্পের সুবিধাও তাঁরা পাবেন। সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্মান জানিয়ে বিশ্বকর্মা পুজোয় ছুটি ঘোষণা আগেই করেছিলেন মমতা। আজকে নিজও বিশ্বকর্মা পুজোয় অংশ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই আবহে এ বার মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বকর্মাপুজোয় অংশগ্রহণ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।