করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় যান্ত্রিক ত্রুটিবিচ্যুতিকেই দায়ী করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে 'অ্যান্টি কলিশন সিস্টেম' নিয়েও নিজের বক্তব্যে অনড় মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'রেলমন্ত্রীর সামনেই বলেছি। তখন তো ঘাড় নাড়ছিলেন। তখন মুখ খুললেন না কেন, অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস নিয়ে আমি যখন বলছিলাম। ডাল মে কুছ কালা হ্যায়, যা সত্যি সেটা বের করো। আগামীতে তো জীবন বাঁচবে। পদত্যাগ চাই না। জনতাই চাইবে। সত্যি কী ছিল, বলো। একদিনে তদন্ত হয়ে যায় না। তিনমাস লাগে।'
এরপর বাংলার মৃত ও আহতদের পরিসংখ্যান দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, '২০৬ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ৬২ জন মারা গেছে। ৭৩ জন ওড়িশায় ভর্তি। ৫৬ জনকে ছাড়া হয়েছে। ১৮২ জনকে এখনও চিহ্নিত করা হয়নি। মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আহত ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। এবং আগামী তিনমাস সরকারের তরফে সাহায্য। অল্প আহতদের ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আহত হয়নি, অথচ ট্রমায় আছে এমনদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আমাদের কাছে মৃত্যুর লিস্ট বাড়ছে। ওদের কাছে কমছে।'
এরপরই মুখ্যমন্ত্র্রী অভিযোগ করেন, যারা ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাইরে গিয়েছিলেন। তাঁরা সব ট্রমায় আছেন। ভালো করে ওষুধও দেওয়া হয়নি। মাথায় একটা পট্টি বাধা হয়েছে। আমরা বাসে-ট্রেনে নিয়ে এসেছি। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। বেলচা দিয়ে কেটে অর্ধেকটা বডি বের করেছে। দেখা যায়না চোখে। মানুষ মনে গেলেও দুঃখ যায় না। তার থেকেও কষ্ট কখন বডি পাব। কখন চিহ্নিত হবে ইত্যাদি নিয়ে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, 'অ্যান্টি কলিশন কেন করেছিলাম। ট্রেন অটোমেটিক দাঁড়িয়ে যাবে। এখন আর সেসব কিছুই নেই। রেল ভবনও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। রেলটাকে যেন বেচার জন্য রাখা হয়েছে। ভুল তথ্য দিয়েছে। আমি যেটুকু পেয়েছি জোগাড় করেছি। আমি তো সব করে দিয়ে এসেছিলাম বলেই রেলটা ছিল। কিন্তু তারপর আর কেউ দায়িত্ব নেয়নি। আমি না থাকলে দিল্লি মেট্রো হতই না। পদত্যাগ নয়, বিচার চাই। সত্যি বেরিয়ে আসুক। রেলের চরিত্রটাই নষ্ট করা হয়েছে।'