কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি মনে করিয়ে দিলেন, সাংবিধানিক পদে থেকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে তিনি সরকার ফেলে দেওয়ার কথা বলতে পারেন না। চক্রান্ত করছেন অমিত শাহ।
এ দিন মমতা বলেন,'গত ১৪ এপ্রিল ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় বিজেপির সভা করতে এসেছিলেন। সভা করতেই পারেন। দলের সভায় কী বলবেন সেটা তাঁর নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু কখনও সংবিধানের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শপথ নিয়ে বলতে পারেন না, ৩৫টা আসন পেলে বাংলায় সরকার থাকবে না। মানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চক্রান্ত করছেন! এত ঔদ্ধত্য যে গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে রক্ষা করার পরিবর্তে তিনি বলছেন,গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ভেঙে ফেলতে পারেন।' মমতা যোগ করেন,'কোন আইনে? তার মানে সংবিধানেও বদল করতে চাইছে! এ কথা বলার কোনও অধিকার নেই তাঁর।'
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করে মমতা বলেন,'এ কথা বলার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তাঁর থাকার কোনও অধিকার নেই। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি।' বিজেপি ৫টা আসনও পাবে না বলে পাল্টা দিয়েছেন মমতা। এ দিন তিনি বলেন,'২১ সালে ২০০ আসন পাব বলেছিল বিজেপি। আবার ক্যাডারদের খুশি করতে এসব বলছে। ৫টা পেয়ে দেখা তো! কাজ নেই, কম্মো নেই। উনি নিজেই থাকবেন না। ২৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসছে না। ভোট দাও বললে ভোট দেয় না কেউ। কাজ দিন। ২৪ সালে বিজেপি আসবে না। জোর করে অমিত শাহ এসব বলছেন। এটা সফল হবে না।'
আরও পড়ুন- অবশেষে উদ্ধার জীবনের দ্বিতীয় মোবাইলও; জালে বোয়াল, শোলও
শুক্রবার সিউড়িতে সভা করেন অমিত শাহ। ওই সভায় ২০২৪ সালের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলা থেকে ৩৫টি আসনের টার্গেট তাঁর। তিনি বলেছিলেন,'বাংলায় অনুপ্রবেশ চান? অনুপ্রবেশ রোখার একমাত্র রাস্তা বিজেপি। গো পাচার চান? অসমে গো-পাচার ও অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়ে গিয়েছে, কারণ সেখানে বিজেপির সরকার।' সেই সঙ্গে শাহ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন,'২৪-এ ৩৫ আসন দিন, আমি বলে যাচ্ছি ২৫-এর আগেই মমতা দিদির সরকার পড়ে যাবে। একবার পদ্ম ফোটান। বোমা ফাটবে না। রাম নবমীতে হামলা হবে না। অত্যাচার হবে না। অনুপ্রবেশ হবে না। না গোপাচার হবে। যে ধরনের দুর্নীতি চলছে বাংলায় তা শেষ করার একটাই রাস্তা ভারতীয় জনতা পার্টি।'
রাম নবমীর মিছিলে হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে শাহ বলেছিলেন,'হাওড়া ও রিষড়ায় রাম নবমীর শোভাযাত্রায় হামলা হয়েছে। আমি প্রশ্ন করছি, বাংলায় রাম নবমীর শোভাযাত্রা বেরানো উচিত? রাম নবমীর শোভাযাত্রা শান্তিতে না বেরোলে চলবে কীভাবে। তৃণমূলের তোষণের রাজনীতির কারণে ক্ষমতা বেড়ে গিয়েছে। আমি বিশ্বাস দিচ্ছি, একবার লোকসভায় মোদীজিকে ৩৫ আসন দিন, কারও ক্ষমতা হবে না রাম নবমীর শোভাযাত্রার মিছিলে হামলা করার।'