বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশিদের ভাষা বলে অভিহিত করেছে দিল্লি পুলিশ। এই অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ইস্যুতে পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটল বঙ্গ বিজেপি। দলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের অভিযোগ, বাংলাদেশিদের রক্ষা করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেজন্য বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশিদের বিষয়টা গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
অগ্নিমিত্রা পালের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপব্যাখ্যা করছেন। পশ্চিমবঙ্গ ও দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন তিনি। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে অগ্নিমিত্রা বলেন, 'পার্থক্য আছে। যেমন আমি একজন বাঙালি। আর আমি পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করি। তবে বাংলাদেশে আলাদা বাংলা বলা হয়। তাঁরা যে ভাষায় কথা বলেন সেটা আমি বুঝি না। এমনকী বাংলাদেশেও আলাদা আলাদা ভাবে বলা হয়। যেমন সিলেট, রংপুর, রাজশাহির মানুষ একে অপরের থেকে আলাদা ধরনে কথা বলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব জানেন। তাও তিনি অপব্যাখ্যা করছেন।'
অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অপব্যাখ্যার কারণ ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি। বিহারে SIR হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে তা যেন না হয় সেজন্য চেষ্টা করছেন। তাঁর কথায়, 'কয়েকদিন ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থা IPA ভুয়ো ভিডিও ছড়াচ্ছে। এর কারণে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে এটাই প্রচারের চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী।'
অগ্নিমিত্রার দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের আমলে বাঙালির অবস্থা সব থেকে বেশি শোচনীয় হয়েছে। সেই দিকে রাজ্য সরকার নজয় দেয়নি। প্রশাসন বারবার ব্যর্থ হয়েছে। শিক্ষা-চাকরি সব ক্ষেত্রে এই রাজ্যের মানুষকে পিছিয়ে দিয়েছে। অগ্নিমিত্রার মমতাকে প্রশ্ন, 'যখন ২৬ হাজার বাঙালি শিক্ষক চাকরি হারালেন তখন আপনার বাঙালি অনুভূতি কোথায় ছিল? ২২ লক্ষ লোক পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে ভিন রাজ্যে কাজ করছেন। তাঁদের ফিরিয়ে আনতে বা রাজ্যে কাজের ব্যবস্থা নিতে সরকার কী পদক্ষেপ করছে? রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেবল উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, পালন করেননি একটাও।'
সম্প্রতি দিল্লির লোদী কলোনি থানার এক পুলিশ অধিকারিক একটি চিঠি পাঠান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বঙ্গভবনের অফিসার-ইন-চার্জকে। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই চিঠিতে বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশিদের ভাষা বলে অভিহিত করেছে দিল্লি পুলিশ। তারপর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে।