আরও একবার রাজ্য এবং রাজ্যপাল সংঘাত! এবার রাজ্য সরকারের অভিযোগ, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিল আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল নবান্ন। তাদের বক্তব্য, ৮টি বিল পাঠানো হলেও তাতে অনুমোদন দেননি রাজ্যপাল। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে অবিলম্বে শুনানির আর্জি করেন আস্থা শর্মা।
রাজ্যের আইনজীবী আস্থা শর্মা দাবি করেছেন, ৮টি বিলে অনুমোদন দেননি সিভি আনন্দ বোস। সংবিধানের ২০০ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছেন। কোনও উপযুক্ত কারণ ছাড়াই বিলগুলি আটকে রেখেছেন। প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, ইমেলে গোটা বিষয়টি পাঠাতে হবে। তিনি খতিয়ে দেখবেন।
কী বলছে অনুচ্ছেদ ২০০?
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০০ অনুযায়ী, বিধানসভায় কোনও বিল পাশ হলে তা অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হবে রাজ্যপালের কাছে। অনুমোদন অনুমোদন দিতেও পারেন আবার না-ও দিতে পারেন, এটা সম্পূর্ণরূপে রাজ্যপালের এক্তিয়ারভুক্ত। তিনি চাইলে রাষ্ট্রপতির বিবেচনাতেও বিলটি আনতে পারেন।
কোন ৮টি বিল আটকে রয়েছে?
১। পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল। ২০২২ সালের ১৩ জুন পাশ হয়েছিল।
২। পশ্চিমবঙ্গ পশু এবং মৎসবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। ২০২২ সালের ১৫ জুন থেকে আটকে।
৩।পশ্চিমবঙ্গ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। ২০২২ সালের ১৪ জুন পাশ হয়েছিল।
৪।পশ্চিমবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (দ্বিতীয় সংশোধনী) বিল। ২০২২ সালের ১৭ জুন থেকে আটকে।
৫।পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। ২০২২ সালের ২১ জুন পাশ হয়েছিল।
৬।পশ্চিমবঙ্গ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন(সংশোধনী) বিল। পাশ হয়েছিল ২০২২ সালের ২৩ জুন।
৭।পশ্চিমবঙ্গ নগর পরিকল্পনা এবং নগরোন্নয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। পাশ হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই।
৮।পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন(সংশোধনী) বিল। ২০২৩ সালের ৪ অগাস্ট পাশ হয়েছিল বিল।
এই ৮টি বিলের মধ্যে ৬টি বিল যখন বিধানসভায় পাশ হয়েছিল তখন রাজ্যপাল ছিলেন জগদীপ ধনখড়। শেষ ২টি বিল পাশ হয় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের জমানায়। নবান্নের অভিযোগ, এই ৮টি বিলই আটকে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আর্জিতে অতীতের নজির টেনেছেন রাজ্যের আইনজীবী। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন,বিল আটকে রাখার জন্য গতবছরই তামিলনাড়ু ও কেরলের রাজ্যপালদের ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তাছাড়া তেলেঙ্গানা ও পঞ্জাবের রাজ্যপালদের অবিলম্বে বিল ফেরত পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়।