পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের আপ্তসহায়ক এবং রাজভবনের দু'জন কর্মচারীর বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্ত আপাতত স্থগিত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহার মতে, আবেদনকারীরা নিম্ন আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। পুরো মামলার ভিডিওগ্রাফি পুলিশের কাছে রয়েছে। এ পর্যন্ত করা তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট ১০ জুন আদালতে দাখিল করতে হবে। মামলার তদন্ত ১৭ জুন পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে আদালত।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছিলেন এক মহিলা। নির্যাতিতা অভিযোগ করেছিলেন যে রাজভবনের কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় রাজ্যপালের আপ্তসহায়ক এবং অন্য দু'জন কর্মচারী তাঁকে বাধা দিয়েছিলেন। ১৫ জুন এই তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। নিম্ন আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও কলকাতা পুলিশ তাঁদের হয়রান করছে। এই মর্মে অভিযোগ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সেই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি অমৃতা সিনহা তদন্তপ্রক্রিয়া ১৭ জুন পর্যন্ত স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।
হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেন ওই তরুণী। তার ভিত্তিতে এফআইআর রুজু করে তদন্তে নামে লালবাজার। রাজ্যপালের ওএসডি সন্দীপ সিং-সহ রাজভবনের তিন কর্মীকে তলব ৪১ এ ধারায় তলব করেন তদন্তকারীরা। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তাঁরা তদন্তে সহযোগিতা করেননি বলে দাবি রাজভবনের। তার পরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা।
নির্যাতিতা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। ওই দাবির প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেন,'জোর করে ধরে রাখার ধারা কোনওভাবে প্রযোজ্য নয়। ঘটনার ১৩ দিন পর অভিযোগ দায়ের হল কেন? একবার বলা হচ্ছে ৩৪১ ধারা (আটকে রাখা) দেওয়া হয়েছে। পরের লাইনে লেখা হচ্ছে, কোনও প্রকারে বেরিয়ে আসেন ওই মহিলা'।
রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত সওয়াল করেন,'অভিযোগ এলে প্রাথমিকভাবে সেটা সত্যি ধরে নিয়ে ধারা যুক্ত করে পুলিশ। এত তাড়াতাড়ি মামলা কারণ অস্পষ্ট। মামলাকারীদের রক্ষাকবচ দিলে রাজ্যপালকে রক্ষাকবচ দেওয়া হচ্ছে মনে হবে। সওয়াল-জবাব শুনে বিচারপতি অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষণ, কিছু ঘটনা অস্বাভাবিক লেগেছে। তাই তদন্তে স্থগিতাদেশ দিতে চায় আদালত।