গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ওপর দানাবাঁধা গভীর নিম্নচাপটি গত কয়েক ঘন্টার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাব ফেলেছে। এটি বর্তমানে কলকাতা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমে, বাঁকুড়া থেকে ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং জামশেদপুর থেকে ১০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত।
আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে সরে যাচ্ছে। এরপর এটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এই নিম্নচাপটি ঝাড়খন্ড এবং উত্তর ছত্তিশগড়ের উপর দিয়ে প্রায় পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
নিম্নচাপের কারণে ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সমুদ্র এলাকাগুলি, বিশেষ করে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বেশ উত্তাল থাকায় মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঝড়ো হাওয়া ৫০-৭০ কিমি প্রতি ঘণ্টার বেগে বইতে পারে, যার ফলে স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। রবিবার সন্ধেয় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টির দাপট দেখা গেছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, অতি গভীর নিম্নচাপটি বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং কলকাতার উপর অবস্থান করছে। এই পরিস্থিতি আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে এবং এরপরে নিম্নচাপটি শক্তি হারিয়ে ঝাড়খণ্ড এবং উত্তর ছত্তীসগড়ের দিকে অগ্রসর হবে।
আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে সোমবারও ভারী বৃষ্টির দাপট বজায় থাকবে। তবে মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হবে এবং বৃষ্টির মাত্রা ধীরে ধীরে কমবে। শনিবার পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও কোথাও কোথাও দু-এক পশলা ভারী বৃষ্টিও হতে পারে।
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পশ্চিম বর্ধমানে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং কালিম্পঙে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গে সোমবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমতে শুরু করবে।
বঙ্গোপসাগর বর্তমানে উত্তাল অবস্থায় রয়েছে। ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার কারণে সোমবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামীকালও সমুদ্রে ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর।