ভাত বাঙালির প্রধান খাবার। এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। নিত্যদিন কোটি-কোটি বাঙালি ভাত খান, রাঁধেন। কিন্তু অনেকেই ভাত রাঁধতে গিয়েই সমস্যায় পড়েন—ভাত একদম গলে যায়। আবার কারও ভাত ধবধবে সাদা হয় না। তখন তাঁরা ভাবেন হয় তো আরও দামী চাল কিনলে তবেই সাদা, লম্বা, ঝরঝরে ভাত হবে। কিন্তু বিশেষ কিছু কৌশল অনুসরণ করলেই সাধারণ ভাতই হবে ঝরঝরে ও ধবধবে সাদা। আসুন, জেনে নেওয়া যাক সেই পদ্ধতি:
১. ভালো মানের চাল বেছে নিন
ঝরঝরে ও সাদা ভাতের জন্য চালের মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন আপনার ৫০ টাকা/কেজি বাজেট। সেই বাজেটেই এক কেজি করে আপনার এলাকার ৫টি দোকান থেকে চাল কিনুন। প্রতিটি চাল নিচের নিয়ম মেনে রেঁধে দেখুন। এতেই বুঝে যাবেন সেরা কোনটি। পুরনো চাল নতুন চালের তুলনায় বেশি ঝরঝরে হয়, তাই চেষ্টা করুন এক বছরের পুরনো চাল ব্যবহার করতে।
২. চাল ধোয়া ও ভিজিয়ে রাখা
ভাত রান্নার আগে চাল ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া দরকার। দশ থেকে বারো বার পরিষ্কার জল দিয়ে ধুলে চালের অতিরিক্ত স্টার্চ বেরিয়ে যায়। এর ফলে ভাতের দানা জড়িয়ে যায় না। ধোয়ার পর অন্তত ২০-৩০ মিনিট চাল ভিজিয়ে রাখলে ভাত আরও ঝরঝরে হবে।
৩. সঠিক পরিমাণ জল ব্যবহার করুন
ভাত ঝরঝরে রাখতে জলের পরিমাণ ঠিক রাখা জরুরি। রান্নার পদ্ধতি অনুযায়ী জল কম-বেশি হতে পারে। তবে একটু বেশিই জল রাখবেন। এতে ফ্যান বেশি ঘন হবে না। গালতেও সুবিধা। স্টার্চ ভাত থেকে সহজেই বেরিয়ে যাবে।
৪. ফুটন্ত জলে চাল দিন
অনেকেই ঠান্ডা জলে চাল দিয়ে রান্না করেন, কিন্তু ঝরঝরে ভাতের জন্য ফুটন্ত জলে চাল দেওয়া ভালো। এতে চালের বাইরের স্তর দ্রুত সেদ্ধ হয় এবং ভাত কম ভেঙে যায়।
৫. ঢাকনা খুলে রান্না করুন
ঢাকনা বন্ধ করে রান্না করলে অনেক সময় স্টার্চ বের হতে পারে না, ফলে ভাত একটু আঠালো হয়ে যায়। তাই ভাত ফুটতে দিলে মাঝেমধ্যে ঢাকনা খুলে নাড়াচাড়া করুন এবং অতিরিক্ত স্টার্চ বের হতে দিন।
৬. বাড়তি ফ্যান ঝরিয়ে নিন
ভাত ঝরঝরে রাখতে রান্না শেষে চাল ছেঁকে অতিরিক্ত ফ্যানযুক্ত জল ফেলে দিন। এতে চাল কম আঠালো হবে এবং রংও উজ্জ্বল থাকবে।
৭. সামান্য লেবুর রস দিন
ভাত ধবধবে সাদা রাখতে রান্নার সময় জলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মেশাতে পারেন। এটি ভাতের রঙ উজ্জ্বল রাখে এবং স্বাদেও হালকা পরিবর্তন আনে।
৮. রান্নার পর কিছুক্ষণ রেখে দিন
ভাত রান্নার পর গরম অবস্থায় ঢাকনা খুলে ৫-১০ মিনিট রেখে দিন। এতে অতিরিক্ত বাষ্প বেরিয়ে গিয়ে ভাত আরও ঝরঝরে হয়ে উঠবে।