
হাঁটুর বা হাড়ের সমস্যায় জর্জরিত মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আর এই রোগে ভুক্তভোগীদের অনেককেই চিকিৎসক স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন নেওয়ার বা ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। যদিও স্টেরয়ডের নাম শুনলেই অনেকের বুকে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। এই বুঝি শরীর খারাপ হয়ে গেল, ভাবটা থাকে এমন। তাই তাঁরা স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন বা ওষুধ ব্যবহার করতে চান না।
এখন প্রশ্ন হল, সত্যিই কি স্টেরয়েড ইঞ্জেশন বা ওষুধ ক্ষতিকর? নাকি এটা একটা মিথ? আর সেই উত্তরটা জানতেই আমরা যোগাযোগ করেছিলাম হাওড়ার নারায়ণা হাসপাতালের অর্থোপেডিক চিকিৎসক ডাঃ অতুল শ্রীবাস্তবের সঙ্গে। আসুন তাঁর মতামত জেনে নেওয়া যাক।
স্টেরয়েডের কাজ কী?
ডাঃ শ্রীবাস্তব জানালেন, এই শতাব্দির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ হল স্টেরয়েড। এটি জীবন বাঁচাতে পারে। আর তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি কোভিডের সময়। এই ওষুধটি তখন অসংখ্য প্রাণ বাঁচিয়েছে। আর কোভিডের কথা যদি ছেড়েও দিই, তাহলেও এর রয়েছে হাজার ব্যবহার। এমনকী হাড়ের ব্যথার চিকিৎসাতেও এর বহুল ব্যবহার রয়েছে।
তিনি বলেন, 'স্টেরয়েড সাধারণত শরীরের প্রদাহ কমায়। যার ফলে কমে যায় ব্যথা, ফোলা। মানুষ রিলিফ পান।'
এটা কি শরীরের ক্ষতি করতে পারে?
এই বিষয়ে ডাঃ শ্রীবাস্তবের মন্তব্য, 'ঠিকভাবে ব্যবহার করলে ক্ষতি হওয়ার প্রশ্নই নেই। বরং এতে রোগী ভাল থাকবেন। আসলে যখন ব্যথা-যন্ত্রণা খুব বেশি থাকে, তখন এর ইঞ্জেকশন বা ওষুধ দেওয়া হয়। এটি তখন দারুণ কাজ করে। রোগীর সমস্যা দ্রুত যায় কমে।'
তবে এই ওষুধ বা ইঞ্জেকশন খুবই কম সময়ের জন্য ব্যবহার করা উচিত। অন্যথায় শরীরের হাল বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন
এই ধরনের ইঞ্জেকশন বা ওষুধ কেউ নিজে ব্যবহার করেন না। বরং চিকিৎসক বলেন বলেই ব্যবহার করেন। আর চিকিৎসক অনেক বেশি জানেন। তিনি ঝুঁকির বিষয়টা মাথায় রেখেই প্রেসক্রিপশন বানান। তাই কোনও চিকিৎসক যদি স্টেরয়েড ওষুধ বা ইঞ্জেকশন লেখেন, তাহলে সেগুলি ব্যবহার করুন। তাহলেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে মনে করেন ডাঃ শ্রীবাস্তাব।
সব ইঞ্জেকশনে স্টেরয়েড থাকে না
অনেকেই মনে করেন হাঁটুর সব ইঞ্জেকশনেই বোধহয় স্টেরয়েড রয়েছে। তবে বিষয়টা একবারেই তেমন নয়। হাজার রকমের ইঞ্জেকশন হয়। আর হাঁটুতে সবথেকে বেশি ব্যবহার হয় ল্যুবরিকেন্ট ইঞ্জেকশন। এটি জয়েন্টের ক্ষতি আটকাতে পারে বলে জানালেন ডাঃ শ্রীবাস্তব।