চিনি খাওয়া যে ভাল না, তা এখন মোটামুটি সবাই জানেন। বেশি চিনি খেলে শরীরে নানা সমস্যা হয়। ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, হৃদরোগের ঝুঁকি, এমনকি ত্বকের ক্ষতিও হতে পারে। তাই অনেকে এখন চিনির বিকল্প হিসেবে আর্টিফিসিয়াল সুইটনার খাচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, চিনির বদলে কৃত্রিম মিষ্টি খাওয়াটা কি আদৌ নিরাপদ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিমিতভাবে খেলে আর্টিফিসিয়াল সুইটনার চিনির তুলনায় অনেকটাই ভাল অপশন। চিনি শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করে। এর ফলে মেদ বাড়ে। অন্যদিকে বেশিরভাগ আর্টিফিসিয়াল সুইটনারে ক্যালোরি প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বা ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য এগুলি অনেক বেশি নিরাপদ।
বর্তমানে বাজারে নানা ধরনের আর্টিফিসিয়াল সুইটনার পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়গুলির বিষয়ে একটু জেনে নেওয়া যাক।
১. স্টেভিয়া (Stevia):
এটি একটি প্রাকৃতিক উদ্ভিদ থেকে তৈরি মিষ্টিকারক। এতে ক্যালোরি নেই, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বেশ নিরাপদ বলে মনে করা হয়। স্টেভিয়া খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়ে না, আবার স্বাদও থাকে মিষ্টির মতোই।
২. অ্যাসপারটেম (Aspartame):
এই সুইটনারটি চিনির থেকে প্রায় ২০০ গুণ বেশি মিষ্টি। তবে এতে ক্যালোরি খুবই কম। ঠান্ডা খাবার বা পানীয়তে এটি বেশি ব্যবহার করা হয়। তবে যাঁদের Phenylketonuria (PKU) নামের জিনগত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের এটি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
৩. সুক্রালোজ (Sucralose):
এটি উচ্চ তাপে স্থিতিশীল, তাই রান্না বা বেকিংয়েও ব্যবহার করা যায়। এটি চিনির তুলনায় ৬০০ গুণ বেশি মিষ্টি, কিন্তু শরীরে ক্যালোরি অ্যাড করে না। ফলে ডায়াবেটিস রোগী ও ওজন কমাতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছে এটি জনপ্রিয়।
৪. স্যাকারিন (Saccharin):
সবচেয়ে পুরোনো আর্টিফিসিয়াল সুইটনারগুলির মধ্যে একটি। একসময় এটি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, এখন সীমিত পরিমাণে এটি খাওয়াকে নিরাপদ বলা হয়। তবে এখন আর বাজারে এটি খুব বেশি পাওয়া যায় না।
তবে বিশেষজ্ঞ এটাও বলছেন যে, অতিরিক্ত পরিমাণে কোনও সুইটনারই খাওয়া ঠিক নয়। মিষ্টির স্বাদে আসক্তি কমানোই আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত। মাঝে মাঝে সামান্য পরিমাণে আর্টিফিসিয়াল সুইটনার ব্যবহার করলে ক্ষতি নেই। তবে তা যেন রোজের অভ্যাসে না পরিণত হয়।