সুস্থ চোখের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের খাদ্যে এমন কিছু পুষ্টিগুণ থাকা প্রয়োজন যা চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়। তাই জেনে নেওয়া যাক, চোখ ভালো রাখতে ঠিক কী ধরনের খাবার বাঙালিদের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন আছে, যা ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়। ভিটামিন এ চোখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি রেটিনার স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক এবং চোখের রোদ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। এছাড়া, গাজর চোখের শুষ্কতা কমাতেও সহায়তা করে।
পালং শাক ভিটামিন সি, ই এবং বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ, যা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। পালং শাকের মধ্যে থাকা লুটিন এবং জেক্সানথিন নামক উপাদান চোখের পেশীকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। নিয়মিত পালং শাক খেলে বয়সজনিত চোখের সমস্যাও কমে।
টমেটোতে থাকে প্রচুর ভিটামিন সি এবং লাইকোপিন, যা চোখকে সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। চোখের চারপাশের ত্বককে সুস্থ রাখতেও এটি সহায়ক। এছাড়া, এটি চোখের প্রদাহ দূর করতে সহায়ক।
বাদামের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ই, যা চোখের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন ই চোখের কোষকে ক্ষতিকর মুক্ত কণার প্রভাব থেকে রক্ষা করে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বাদাম অন্তর্ভুক্ত করলে চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। বিশেষ করে, আখরোট এবং কাঠবাদাম চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ডিমে ভিটামিন এ, লুটিন, জিংক এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে যা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ডিমের মধ্যে থাকা জিংক রাতকানা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। সকালে একটি ডিম খাওয়ার অভ্যাস চোখের জন্য দারুণ উপকারী।
সামুদ্রিক মাছে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চোখের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষত, সালমন, সার্ডিন, টুনা মাছ খেলে চোখের রেটিনা সুরক্ষিত থাকে। মাছের নিয়মিত সেবন চোখের প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে।
কমলালেবু, পেঁপে, আমলকী, স্ট্রবেরি, আঙুর প্রভৃতি ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা চোখের জন্য প্রয়োজনীয়। এছাড়া, পেঁপে ও কমলালেবুর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
দুধ ও দইয়ে আছে ভিটামিন এ এবং জিংক, যা চোখের দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে। এছাড়া, দুধের ক্যালসিয়াম চোখের শক্তি বাড়াতেও কার্যকর।
চোখকে ভালো রাখতে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, লুটিন, জেক্সানথিন এবং জিংক সমৃদ্ধ খাবার গুরুত্বপূর্ণ। এইসব পুষ্টিগুণ দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়, চোখের শুষ্কতা কমায়, এবং রেটিনাকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে সহায়ক।