স্তন ক্যান্সার একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক রোগ এবং এর অনেক কারণ থাকতে পারে। শুধু জেনেটিকই নয়, জীবনযাত্রা সহ আরও অনেক কারণ রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী সময়ে স্তন ক্যান্সারের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। কিছু গবেষণা সতর্ক করছে যে ভবিষ্যতে, প্রতি আটজন মহিলা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকতে পারে।
স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ কী, কীভাবে হয়, এর পরীক্ষা এবং চিকিৎসা সম্পর্কে জানা সকল নারীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, উপসর্গ সম্পর্কে না জানার কারণে অনেকে বুঝতেই পারেন না, তার ঠিক কী হয়েছে। আগে, স্তন ক্যান্সার একটি নির্দিষ্ট বয়সের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখা যেত। সেসময় স্তন ক্যান্সার ৪০ বছর বয়সের পরেই দেখা যেত সাধারণভাবে। তবে বর্তমান সময়ে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী বহু মহিলাও এই রোগে আক্রান্ত হয়।
স্তন ক্যান্সারের তিনটি বিশেষ লক্ষণ
* স্তনে ছোট ছোট পিণ্ড হওয়া এই ক্যান্সারের একটি সাধারণ লক্ষণ। ডাঃ প্রজ্ঞা শুক্লা জানান, স্তনে কোনও ধরনের পিণ্ড বা ফোলাভাব অনুভূত হলে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এজন্যে মহিলাদের উচিত সময়ে তাদের স্তন পরীক্ষা করা।
* আপনি যদি স্তনের ত্বকে কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তা অবহেলা করবেন না। তবে তা হতে পারে ত্বকে জ্বালাপোড়া, ত্বকের লালভাব বা শক্ত হয়ে যাওয়া, ত্বকের টেক্সচারে পরিবর্তন বা ত্বকে ভেজা ভাব ইত্যাদি। এরকম কোনও লক্ষণ দেখা দিলে, সতর্ক থাকুন।
* আপনি যদি স্তনে কোনও ধরনের ফোলা লক্ষ্য করেন, তাহলে তা নিয়ে অসতর্ক হবেন না। এমনকী আপনি যদি সন্তানকে ব্রেস্টমিল্ক না খাওয়ান, তবুও স্তনবৃন্তে কোনও ধরনের ক্ষরণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের অনেক উপায় আছে। তার মধ্যে একটি হল খাদ্যাভ্যাস। স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। জানুন কী কী খেলে এই ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
* হলুদ- হলুদে কারকিউমিন নামক উপাদান পাওয়া যায়, যা ক্যান্সার কোষকে বাড়তে ও গঠন করতে দেয় না। এটি স্তন, ফুসফুস এবং ত্বকের ক্যান্সারের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। যেসব মহিলারা নিয়মিত হলুদ খান, তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
* টমেটো- টমেটোতে অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। স্যালাডে টমেটো খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি ৬০ শতাংশ কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে টমেটোতে লাইকোপিন নামক উপাদান পাওয়া যায়, যা অনেক ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে উপকারী।
* রসুন- ক্যান্সার প্রতিরোধে রসুন খুবই কার্যকরী একটি ওষুধ। গবেষণা অনুসারে, যারা নিয়মিত রসুন খান তাদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি খুব কম থাকে। রসুনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। এটি ক্যান্সার প্রচারকারী উপাদানগুলির প্রভাব হ্রাস করে। রসুনে রয়েছে সালফার, ফ্ল্যাভোনস এবং ফ্ল্যাভোনল নামক যৌগ, যা ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং উভয় ক্ষেত্রেই অত্যন্ত উপকারী।
* ব্রকলি- ব্রকলি ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ। এতে এমন একটি উপাদান পাওয়া যায় যা, টিউমার কোষকে বাড়তে দেয় না। এছাড়াও এটি হরমোন ভিত্তিক ক্যান্সার প্রতিরোধ ও প্রতিরোধের জন্য একটি কার্যকর প্রতিকার।
* ডালিম- ডালিম ভিটামিনের খুব ভাল উৎস। এছাড়াও এতে ভিটামিন এ, সি, ই এবং ফলিক অ্যাসিড রয়েছে। এটিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। এটি প্রোস্টেট এবং স্তন ক্যান্সারের শিকারদের জন্যও কার্যকর। প্রতিদিন ডালিমের রস পান করলে শরীরে পিএসএ-র মাত্রা কমে যায় এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার কোষগুলোকে সক্রিয় করে।