বর্তমানে খুব অল্প বয়সী যুবকদের মধ্যেও কোলেস্টেরল রোগ দ্রুত বাড়ছে। কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়েড যা কোষের ঝিল্লি বা (সেল মেমব্রেনে)-এ পাওয়া যায় এবং যা সব প্রাণীর রক্তে পরিবাহিত হয়। একটি সুস্থ শরীরের জন্য প্রচুর কোলেস্টেরল প্রয়োজন। কোলেস্টেরল কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি স্নায়ু কোষকে রক্ষা করতে, ভিটামিন ও হরমোন তৈরি করতে কাজ করে। অনেক কিছু আছে যা খেলেও শরীর কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায়, যেমন মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবার।
অনেকেই বুঝতে পারেন ন ব্রেকফাস্টে কী খেলে তা স্বাস্থ্যকর হবে। অনেকেই আছেন যারা সকালে ঘুম থেকে উঠেই কুকিজ, মাফিন, বাটার টোস্ট ইত্যাদি খেতে পছন্দ করেন। এই ধরনের ব্রেকফাস্ট একেবারেই স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয় না। কারণ এই সব খাবারে চিনির পরিমাণ খুব বেশি। যার কারণে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আপনার কোমরের আকারও বাড়তে শুরু করে। অনেকে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খান- যেমন ছোলা-ভাটুরে, আলু-পরোটা, আলুর পরোটা ইত্যাদি।
আপনার যদি ফ্যাটি লিভার, ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপের সমস্যা থাকে, তবে এই সমস্ত জিনিস থেকে দূরে থাকতে হবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনি সকালে যা খান তা শুধু শরীরে শক্তি যোগায় না, সারাদিন আপনাকে পরিপূর্ণ রাখে। সেক্ষেত্রে ব্রেকফাস্টে উচ্চ প্রোটিন, উচ্চ ফাইবার, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং কিছু কার্বোহাইড্রেট অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কোলেস্টেরল আমাদের রক্তে উপস্থিত একটি মোমের মতো পদার্থ। কোলেস্টেরলের মাত্রা ২০০ মিলিগ্রাম/ ডেসিলিটারের বেশি হলে, উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের শরীরে প্রধানত দুই ধরনের কোলেস্টেরল পাওয়া যায় - উচ্চ ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (High Density Lipoprotein/ HDL) এবং নিম্ন ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (Low Density Lipoprotein Cholesterol/ LDL) কোলেস্টেরল। এলডিএল কোলেস্টেরলকে খারাপ কোলেস্টেরলও বলা হয়। উচ্চ মাত্রায় এলডিএল কোলেস্টেরল থাকলে হৃদরোগের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। এইচডিএল কোলেস্টেরল ভাল কোলেস্টেরল নামে পরিচিত। এটি আপনার রক্ত থেকে লিভারে খারাপ কোলেস্টেরল বহন করে এবং এটি থেকে মুক্তি পায়। এছাড়াও এইচডিএল কোলেস্টেরল আপনার শরীরকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
ধমনীতে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে সঠিক পরিমাণে রক্ত হার্টে পৌঁছায় না, যার কারণে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক ইত্যাদির ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমন কিছু খাবার আছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর এবং প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে এগুলো খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ওটস- ব্রেকফাস্টে ওটস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল বলে মনে করা হয়। এতে প্রচুর ফলও যোগ করতে পারেন। এটি আপনার পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা থাকবে। এতে রয়েছে দ্রবণীয় ফাইবার। যা, খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
ডিম- ডিমে প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি পাওয়া যায়। এতে উপস্থিত উচ্চ প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তবে ডিম খাওয়ার সময় হলুদ অংশ বেশি না খাওয়ার চেষ্টা করুন।
অ্যাভোকাডো- অ্যাভোকাডোতে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট পাওয়া যায়। যা, ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। ব্রেকফাস্টে অ্যাভোকাডো খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে।
বেরি- বেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং দ্রবণীয় ফাইবারে পরিপূর্ণ। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও আপনি স্মুদি তৈরি করে পান করতে পারেন।
দই- প্রোটিন এবং প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ গ্রীক দই পাকস্থলীর জন্য স্বাস্থকর। এর পাশাপাশি এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে।