বড় দাবি করেছেন ওরাকলের (ORACLE) সিইও ল্যারি এলিসন। তিনি বলেছেন, শীঘ্রই ৪৮ ঘণ্টায় ক্যান্সার শনাক্তকরণ থেকে শুরু করে টিকা দেওয়া পর্যন্ত সবকিছুই করা যাবে। ক্যানসারের মতো বিপজ্জনক রোগ নিয়ে বুধবার এই বড় দাবি করলেন ল্যারি এলিসন।
ল্যারি এলিসন বলেন, 'কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) সাহায্যে ক্যান্সার সনাক্তকরণ থেকে শুরু করে এর কাস্টম ভ্যাকসিন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তৈরি করা সম্ভব। ক্যান্সার আগে ধরা পড়লে কল্পনা করুন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার ক্যান্সারের জন্য একটি কাস্টম ক্যান্সার ভ্যাকসিন তৈরি করা যাবে।' তবে ল্যারিও বলেছেন যে এটি ভবিষ্যতের জন্য প্রতিশ্রুতি।
যদি ল্যারি এলিসন তার দাবি অনুযায়ী ক্যান্সারের প্রতিষেধক তৈরিতে সফল হন, তাহলে রাশিয়ার পর আমেরিকা হবে দ্বিতীয় দেশ যারা ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের প্রতিষেধক তৈরি করবে। আমেরিকার পক্ষে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভ্যাকসিন তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ কারণ রাশিয়া ঘোষণা করেছে যে ২০২৫ সাল থেকে তাদের দেশে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। রাশিয়া তার নাগরিকদের বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন দেবে। এই পরিস্থিতিত আমেরিকা এই বড় অর্জনে রাশিয়া থেকে পিছিয়ে আছে বলেই মনে করা হচ্ছিল।
ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় ইতিমধ্যে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের মে মাসে, ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ৪ জন ক্যান্সার রোগীর উপর ব্যক্তিগতকৃত ভ্যাকসিন পরীক্ষা করেছিলেন। বিজ্ঞানীরা দাবি করেছিলেন যে টিকা দেওয়ার মাত্র দুই দিন পরে রোগীদের শক্তিশালী ইমিউনিটি তৈরি হয়েছিল।
রাশিয়ার পর আমেরিকার এই ঘোষণায় উপকৃত হতে পারে গোটা বিশ্ব। কারণ ক্যান্সার এমন একটি রোগ যা প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ। বিশ্বে প্রতি ৬ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যুর কারণ ক্যান্সার।
ভারতেও ক্যান্সারের ঘটনা দ্রুত বাড়ছে। প্রতি বছর ক্যান্সারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ২০২৫ সালের মধ্যে, ভারতে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ অতিক্রম করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পাঁচ বছরে ভারতে ৭১ লাখেরও বেশি ক্যান্সারের ঘটনা ঘটেছে। শুধুমাত্র ২০২৩ সালে প্রায় ১৫ লক্ষ কেস রিপোর্ট করা হয়েছিল। একইভাবে এই পাঁচ বছরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ। পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২০২৩ সালে, ৮.২৮ লাখ।