
এখন ঘরে ঘরে হাঁটুর সমস্যা। ক্ষয়ে যাচ্ছে হাঁটুর জয়েন্টের দুই হাড়ের মধ্যে থাকা কুশন। যার ফলে দুই হাড়ে ঘঁষা লাগছে। বাড়ছে ব্যথা-বেদনা। একটু হাঁটাচলা করতে গিয়েও বেগ পেতে হচ্ছে।
আর এই সমস্যার সহজ সমাধান করে দিতে পারে নি রিপ্লেসমেন্ট বা হাঁটু প্রতিস্থাপন সার্জারি। এই অপারেশনে ক্ষতিগ্রস্ত হাঁটুর জয়েন্টে কৃত্রিম ইমপ্ল্যান্ট লাগান হয়। তাতেই রোগী আবার হাঁটতে পারেন। কমে ব্যথা, যন্ত্রণা।
কিন্তু অনেকেই বুঝতে পারেন না, এই সার্জারি হওয়ার পর সেরে উঠতে লাগে কতদিন? এরপর জীবনযাত্রা হয় কেমন? আর সেই প্রশ্নগুলিরই উত্তর দিলেন ঢাকুরিয়ার মণিপাল হাসপাতালের বিশিষ্ট অর্থোপেডিক সার্জেন ডাঃ দেবাশিস চক্রবর্তী।
সেরে উঠতে লাগবে কতদিন?
হাঁটু সার্জারির পর মোটামুটি ৩ থেকে ৪ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়। তবে রোগী অপারেশনের পরের দিন থেকেই ১টা ক্র্যাচ ধরে হাঁটতে পারেন। এরপর ১ মাসের মধ্যে তিনি কোনও অলবম্বন ছাড়াই হাঁটতে পারেন। কোনও সমস্যা থাকে না বলে জানালেন ডাঃ চক্রবর্তী।
ব্যথা থাকে কতদিন?
এই প্রশ্নের উত্তরে ডাঃ চক্রবর্তী জানান, এটা একটা বড় অপারেশন। তাই একটু ব্যথা-বেদনা তো থাকবেই। তবে রোগীকে ব্যথার ওষুধ দেওয়া হয়। পাশাপাশি নিয়মিত ফিজিওথেরাপি ও ব্যায়াম করতে বলা হয়। সেই সঙ্গে দিতে বলা হয় বরফ। তার মাধ্যমেই ব্যথা কমতে থাকে। আর ৩ মাস পর একবারেই যন্ত্রণা চলে যায়।
৩ মাস পর থেকে হাঁটতে যাওয়া যায়
নিজের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ৩ মাস পর থেকেই হাঁটতে যাওয়া যায়। এমনকী যেতে পারেন ট্রেকিং-এ। এছাড়া ৬ মাস পর থেকে সাঁতার কাটতে পারেন। তবে কোনও অ্যাক্টিভ স্পোর্টসে অংশগ্রহণ করতে চাইলে লেগে যেতে পারে ৬ থেকে ৯ মাস বলে জানালেন এই চিকিৎসক।
কী কী নিয়ম মেনে চলবে হবে?
ডাঃ চক্রবর্তী বলেন, অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রথমত, আপনাকে মাটিতে বসা ছাড়তে হবে। এমনকী নিচু কোনও টুলে বসা যাবে না। এছাড়া সিঁড়ি ওঠানামা কমানোই ভাল। ইন্ডিয়ান টয়লেট ব্যবহার করবেন না। আর চেষ্টা করুন স্কোয়াট না করার। তাতেই সুস্থ থাকতে পারবেন।
ভয়ের কিছু কি?
'এই নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এখন রোবোটিক সার্জারি হয়। যার ফলে খুব নিখুঁত হয় অপারেশন। কাটাছেঁড়া বেশি করতে হয় না। তাই রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। নিজের স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারেন। তাই যাঁদের প্রয়োজন, তাঁরা এই সার্জারি অবশ্যই করে নিন।'
বিদ্র: এই প্রতিবেদটি সচেতনতার উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা হয়েছে। কোনও ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই নিজের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।