
ডায়াবেটিস একটি জটিল অসুখ। আর এই রোগের জন্য চোখেরও ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে। এই সমস্যাকে বলা হয় ডায়াবেটিক আই ডিজিজ। তবুও মানুষের মধ্যে এই অসুখ নিয়ে বিন্দুমাত্র সচেতনতা নেই। যার ফলে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তাই সারা বিশ্বেই নভেম্বর মাসটি ডায়াবেটিক আই ডিজিজ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পালিত হয়।
এই প্রসঙ্গে দিশা চক্ষু হাসপাতালের বিশিষ্ট ভিট্রিও রেটিনা স্পেশালিস্ট ডাঃ শান্তনু মণ্ডল বলেন, 'দেশের কোটি কোটি মানুষ ডায়াবেটিস আক্রান্ত। আর সুগার বেশি থাকার জন্য হতে পারে ডায়াবেটিক আই ডিজিজ। এই অসুখটি অজান্তেই বাড়াবাড়ি দিকে চলে যায়। তাই সাবধান হতে হবে। নিয়মিত চেক-আপে থাকা জরুরি।'
কী কী লক্ষণ থাকে?
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির প্রধান উপসর্গ হল দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া। এই সমস্যা দিন দিন বাড়তে থাকবে। আসলে এই রোগে রেটিনায় তরল জমা হয়। সেই সঙ্গে ভিট্রিয়াস ক্যাভিটির মধ্যে রক্তক্ষরণ হতে পারে। যার ফলে দৃষ্টি শক্তি কমে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, রোগী তার চোখের সামনে ভাসমান কিছু জিনিস দেখতে পারেন। এটি ভিট্রিয়াস গহ্বরের মধ্যে রক্তক্ষরণ শুরু হওয়ার কারণে ঘটে। এর ফলে চোখে ব্যথা হওয়ার রয়েছে আশঙ্কা বলে জানালেন ডাঃ মণ্ডল।
কেন হয়?
ডায়াবেটিস রোগীর সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে না থাকলে রেটিনার ছোট ছোট রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যার ফলে চোখের এই অংশে কমে যেতে পারে অক্সিজেন চলাচল। আর সেটাই সমস্যা তৈরি করে বলে জানাচ্ছেন ডাঃ মণ্ডল।
এছাড়া ডায়াবেটিস রোগীর যদি প্রেশার, কোলেস্টেরল থাকে, তিনি যদি নিয়মিত ধূমপান করেন, তাহলে বিপদের আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পায় বলে জানালেন এই বিশেষজ্ঞ।
নিয়মিত টেস্ট জরুরি
এই রোগের লক্ষণ অনেক সময়ই প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা না পড়তে পারে। কারণ, অধিকাংশ রোগীর পক্ষেই লক্ষণটা ধরে ফেলা সহজ হয় না। তাই রোগটা অনেক দূর এগিয়ে যায়। তাই এই সমস্যার সহজ সমাধান হল নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করা। তাতেই অসুখটা ধরা পড়ে যাবে। সেই মতো শুরু করা যাবে চিকিৎসা বলে জানালেন ডাঃ মণ্ডল। তবে প্রথমে ধরা পড়লে এই রোগের ভাল চিকিৎসা রয়েছে বলে জানালেন তিনি।
প্রতিরোধ জরুরি
আপনাকে সবার আগে রোগ প্রতিরোধ করতে হবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খান। ডায়েটে বদল আনুন। তাহলে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যার ফলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমবে বলে জানালেন ডাঃ মণ্ডল।
বিদ্র: এই প্রতিবেদটি সচেতনতার উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা হয়েছে। কোনও ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই নিজের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।