তেতো খেলে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেকেই এটা বেদবাক্যের মতো মেনে চলেন। বাজার থেকে নিয়মিত উচ্ছে, করলা, নিম পাতা কেনেন। অনেকে তো আবার নিয়ম করে তেতো ব্ল্যাক কফি খান। কিন্তু তেতো খাবার খেলে কি সত্যিই ডায়াবেটিস রোগীদের লাভ হয়? আসুন, বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখা যাক।
উচ্ছে ও করলা: উচ্ছে এবং করলায় রয়েছে মোমোর্ডিসিন ও কারটিন নামক উপাদান, যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এগুলি ইনসুলিন কার্যকর হতে এবং শরীরের মেটাবলিজম উন্নত করতে সাহায্য করে।
নিম পাতা: নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রপার্টিজ। এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। তবে তার মানে এই নয় যে মিষ্টি খেয়ে নিম পাতা খেলে সেটা ব্যালেন্স হয়ে যাবে।
কফি: কফিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস রয়েছে। এটি ইনসুলিন কার্যকর হতে সাহায্য করতে পারে। তবে অতিরিক্ত কফি পান করলে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘুমের ব্যাঘাত বা অ্যাসিডিটি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, তেতো খাবারের এই উপাদানগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা সাময়িকভাবে কমাতে সাহায্য করলেও, এটি কোনও ওষুধের বিকল্প হতে পারে না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ডাক্তারের পরামর্শমতো ওষুধ খাওয়া প্রয়োজন। তেতো খাবার আপনার ডায়েটে ভাল সংযোজন মাত্র। এতেই সেরে যাবে বা নিয়ন্ত্রণ হবে, এমনটা ভাবলে ভুল করবেন।
তাই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে তেতো খাবার উপকারী হলেও, শুধু এগুলির উপর নির্ভর করলে হবে না। ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজন সুষম খাদ্যাভ্যাস, ওষুধ, এবং লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট।
সবশেষে এটুকুই বলা যায় যে, উচ্ছে, করলা, নিম পাতা এবং কফি ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে কিছুটা সহায়ক হতে পারে। তবে এর থেকে কোনও ম্যাজিক আশা করবেন না। তেতো খাওয়ার পাশাপাশি, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।