সাধারণ বাঙালিদের পাত থেকে কাঁচালঙ্কা বাদ পড়ে না। গরম ভাতের সঙ্গে এক কামড় কাঁচালঙ্কা যেন স্বাদই অন্যরকম। শুধু স্বাদ বাড়ায় না, শরীরের জন্যও কাঁচালঙ্কা কিন্তু ভীষণ উপকারী। প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে কাঁচালঙ্কা খাওয়ার একটা আলাদা বিজ্ঞান আছে। আর সেই বিজ্ঞান বলছে, এই অভ্যাস শরীরের নানা সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারে।
কাঁচালঙ্কায় কী থাকে?
কাঁচালঙ্কা এমন এক উপাদান, যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যাপসাইসিন, যা মূলত লঙ্কার ঝাল স্বাদের জন্য দায়ী। এর পাশাপাশি থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, বিটা ক্যারোটিন, এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এছাড়াও কাঁচালঙ্কা শরীরে প্রদাহ কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ভাতের সঙ্গে কাঁচালঙ্কা খাওয়ার উপকারিতা
কাঁচালঙ্কায় থাকা ক্যাপসাইসিন পেটের পাচন রস নিঃসরণে সাহায্য করে। ফলে খাবার সহজে হজম হয়। ভাতের সঙ্গে কাঁচালঙ্কা খেলে গ্যাস, বদহজম, অম্বলের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে।
কাঁচালঙ্কায় থাকা ভিটামিন সি শরীরে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে। প্রতিদিন এক বা দুইটি কাঁচালঙ্কা খেলে ভাইরাল সংক্রমণ, সর্দি-কাশির ঝুঁকি কমে।
ঝাল খেলে শরীরে মেটাবলিজম বাড়ে, ফলে শরীর দ্রুত ক্যালোরি বার্ন করতে পারে। যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টায় রয়েছেন, তাঁরা ভাতের সঙ্গে কাঁচালঙ্কা খেতে পারেন নির্ভয়ে।
কাঁচালঙ্কার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত কাঁচালঙ্কা খাওয়ার ফলে শরীরে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে।
যাঁদের পেপটিক আলসার, অতিরিক্ত অম্বল, বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের কাঁচালঙ্কা এড়িয়ে চলা উচিত। যেহেতু এটি অত্যন্ত ঝাল, তাই পরিমাণ মতো খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
কাঁচালঙ্কা শুধুই স্বাদ বাড়ানোর উপাদান নয়, এটি একটি প্রাকৃতিক ওষুধ। ভাতের সঙ্গে যদি রোজ এক বা দুইটি কাঁচালঙ্কা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করেন, তা হলে শরীর সুস্থ থাকবে, হজমশক্তি ভালো থাকবে, আর নানা রোগের হাত থেকেও মুক্তি মিলবে। তবে অতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়, তাই সবসময় পরিমিত খাওয়ার দিকেই জোর দেওয়া উচিত।