ঘুম মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। সাধারণত ঘুমের সময় শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রম ধীরগতিতে চলতে থাকে, হৃদস্পন্দন কমে আসে, পেশী শিথিল হয় এবং মস্তিষ্ক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করে। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, যদি কেউ বিছানায় যাওয়ার পাঁচ মিনিট বা তার কম সময়ে ঘুমিয়ে পড়েন, তাহলে এটি হতে পারে কোনো গুরুতর শারীরিক সমস্যার লক্ষণ।
অতিরিক্ত দ্রুত ঘুমিয়ে পড়া স্বাস্থ্যঝুঁকির ইঙ্গিত
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাভাবিক ঘুমের জন্য ৫ থেকে ২০ মিনিট সময় নেওয়াই স্বাস্থ্যকর। কিন্তু মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়া ইঙ্গিত দিতে পারে ঘুমের অভাব, ক্লান্তি বা নারকোলেপসি (একটি বিরল স্নায়বিক সমস্যা) এর মতো জটিলতার দিকে।
স্লিপ হেলথ ফাউন্ডেশন সুস্থ মানুষের জন্য প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দেয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন পর্যাপ্ত ঘুম পান না, যা বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ঘুমের অভাবের কারণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
যারা দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত ঘুম পাচ্ছেন না, তাদের মধ্যে বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। ঘুমের অভাবের ফলে দেখা দিতে পারে—
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি
উচ্চ রক্তচাপ ও স্থূলতা
বিষণ্নতা ও মানসিক চাপ
স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও আলঝাইমার রোগের সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যদি আপনি খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েন বা ঘুমের সমস্যা অনুভব করেন, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর কারণ
অনেক কারণেই ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
শব্দদূষণ ও স্ক্রিনের আলো (মোবাইল, টিভি, ল্যাপটপ)
চিন্তা ও মানসিক চাপ
ধূমপান, মাদকাসক্তি ও অনিয়মিত জীবনযাপন
অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ
ঘুমের সমস্যা দূর করতে করণীয়
নিয়মিত ঘুমের রুটিন অনুসরণ করুন
রাতে মোবাইল, টিভি বা স্ক্রিনের ব্যবহার কমান
ঘুমানোর আগে ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন
যথেষ্ট শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করুন
ঘুমের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন