আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার। এটি শরীরের চর্বি ব্যবস্থাপনা, হজম প্রক্রিয়া এবং ডিটক্সিফিকেশনের কাজ করে। রান্নাঘরের রাঁধুনির মতো লিভার ছাড়া শরীরের বিভিন্ন কার্যকলাপ সঠিকভাবে চলতে পারে না। তবে অতিরিক্ত চাপ বা চর্বি জমে গেলে, বিশেষত ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে, এই অঙ্গ শরীরের জন্য বিপজ্জনক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
ফ্যাটি লিভার কী?
ফ্যাটি লিভার হলো লিভারে অস্বাভাবিক পরিমাণ ফ্যাট জমে যাওয়া। এটি লিভারের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। সাধারণত ফ্যাটি লিভার দুই ধরনের হয়—
অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (AFLD): অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের ফলে হয়।
নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD): স্থূলতা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও বিপাকীয় সমস্যার কারণে হয়।
ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ
দ্রুত ক্লান্তি
পেট ফাঁপা বা ফুলে যাওয়া
হঠাৎ ওজন কমা বা বেড়ে যাওয়া
ক্ষুধামান্দ্য
মনোযোগ কমে যাওয়া
মানসিক বিভ্রান্তি
লিভার সুস্থ রাখার প্রাকৃতিক উপায়
শরীরের দোষের ভারসাম্য রক্ষা করুন
আয়ুর্বেদের মতে, বাত, পিত্ত ও কফের মধ্যে ভারসাম্য জরুরি। বিশেষত পিত্ত দোষ নিয়ন্ত্রণে রাখতে যোগাভ্যাস যেমন অধোমুখী স্বনাসন ও পশ্চিমোত্তাসন সহায়ক।
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন
পালং শাক, মেথি, পুদিনা, কারি পাতা লিভারের জন্য উপকারী।
গোটা শস্য যেমন বাদামী চাল, ওটস খান।
আদা ও রসুন প্রদাহ কমিয়ে লিভারকে শক্তিশালী করে।
পরিশোধিত তেলের বদলে ঘি বা মাখন ব্যবহার করুন।
অতিরিক্ত পেটের চর্বি কমান
স্থূলতা লিভারের উপর বাড়তি চাপ ফেলে। নিয়মিত ব্যায়াম ও ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ১০–১৫% ওজন কমালে লিভারের স্বাস্থ্য অনেকটা উন্নত হয়।
পেশী ভর বৃদ্ধি করুন
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য ও শক্তি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশী ভর বাড়ালে বিপাকক্রিয়া উন্নত হয় এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে। এতে লিভারের ক্ষতির ঝুঁকি কমে।
ডিটক্স জুস ও পর্যাপ্ত জল পান করুন
কমলা, গাজর ও হলুদের রস শরীর পরিষ্কার রাখে, হাইড্রেশন বজায় রাখে এবং বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।
পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখুন
একটি সুস্থ অন্ত্র লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে। দই, কিমচি, কনজি ইত্যাদি প্রোবায়োটিক খাবার এবং প্রিবায়োটিক সমৃদ্ধ খাদ্য হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।