
বিশ্বের প্রায় সকলেই দীর্ঘায়ু কামনা করেন। ১০০ বছর বাঁচার স্বপ্ন দেখেন অনেকেই। তবে দীর্ঘ জীবন শুধু ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে না, এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পদ্ধতি। সঠিকভাবে শরীরের যত্ন নিলে আয়ু যেমন বাড়ে, তেমনই সুস্থতাও বজায় থাকে।
ক্যালিফোর্নিয়ার খ্যাতনামা গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. সৌরভ শেঠি, যিনি এইমস, হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এনেছেন। তাঁর মতে, দীর্ঘায়ুর সঙ্গে শরীরের যে অঙ্গটির সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক, তা হলো পা।
ডা. শেঠির কথায়, 'আপনি যদি আপনার পা শক্ত রাখেন, তাহলে আপনি বেশি দিন বাঁচতে পারবেন।' তাঁর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, শরীরের নিম্ন অংশের পেশি গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ, বিপাকীয় স্বাস্থ্য, শরীরের ভারসাম্য এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে বড় ভূমিকা নেয়। বিপরীতে দুর্বল পা পড়েযাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার বা অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের আশঙ্কাও বাড়ে।
পায়ের শক্তি নিয়ে নতুন বিতর্ক
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে ডা. শেঠি জানান, শুধু BMI বা ওজন নয়, দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতা ও বিপাকীয় স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে পায়ের শক্তি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। তাঁর মতে, নিয়মিত শক্তি প্রশিক্ষণ করলে ডায়াবেটিস, পিসিওএস, ফ্যাটি লিভার এবং দীর্ঘদিনের হজমজনিত সমস্যাও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
পা ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের যোগ
গবেষণার তথ্য তুলে ধরে ডা. শেঠি বলেন, যাঁদের পা শক্ত, তাঁদের স্মৃতিশক্তি ভালো হয়, ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে এবং চিন্তাভাবনার গতি তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। পায়ের শক্তি কমতে শুরু করলে সাধারণত সিঁড়ি এড়িয়ে চলা, মেঝে থেকে উঠতে অসুবিধা হওয়া বা অল্প হাঁটাতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।
পা মজবুত রাখতে কী করবেন?
যেকোনও বয়সেই পা শক্ত করার জন্য কিছু সহজ অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. শেঠি। যেমন,
স্কোয়াট ও লাঞ্জ
স্টেপ-আপ
রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ডের ব্যায়াম
নিয়মিত হাঁটা, বিশেষ করে উঁচু-নিচু পথে
এছাড়া লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করাও পায়ের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, পা শুধু চলাফেরার অঙ্গ নয়, এটাই দীর্ঘায়ু ও সুস্থ জীবনের অন্যতম চাবিকাঠি। শুরু থেকেই পা শক্ত রাখলে শরীর থাকবে রোগমুক্ত, আর বয়স বাড়লেও বজায় থাকবে কর্মক্ষমতা ও প্রাণশক্তি।