Watermelon Injected with Sugar: গরমের দুপুরে টুকটুকে লাল, রসালো তরমুজের স্বাদই আলাদা। এই সিজনে আম এবং লিচুর পরেই যদি কোনও জনপ্রিয় ফল থেকে থাকে, সেটা হল তরমুজ। কিন্তু সেই তরমুজ নিয়েই এখন অনেকের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কেন? কারণ তরমুজ আরও লোভনীয় দেখাতে, তাতে লাল রঙের ইঞ্জেকশন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
তরমুজকে মিষ্টি করতে এবং তাকে টকটকে লাল করতে আর্টিফিশিয়াল ফুড কালার এবং চিনির রসের ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন অনেকেই।
ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। 'দ্য সোশ্যাল জংশনে' পোস্ট করা ক্লিপটিতে দেখা যাচ্ছে, একজন মুখোশধারী ব্যক্তি তরমুজে রাসায়নিক ইনজেকশন দিচ্ছে।
ইনস্টাগ্রামে ঘাঁটাঘাঁটি করলে, আপনি এরম আরও হাজারো ভিডিও খুঁজে পাবেন। শুধু লাল রঙই নয়। এই রাসায়নিকের প্রভাবে তরমুজ গরমেও দিনের পর দিন টাটকা ও রসাল থাকে।
বলাই বাহুল্য, কৃত্রিমভাবে রঙ করা, মিষ্টি করা ফল খেলে স্বাস্থ্যের বারোটা বাজবে। রাসায়নিকভাবে ইনজেকশন দেওয়া তরমুজ তাই যথেষ্ট উদ্বেগের একটি বিষয়।
দিল্লির সিকে বিড়লা হাসপাতালের ক্লিনিকাল পুষ্টিবিদ দীপালি শর্মা জানালেন, 'বিক্রেতাদের মধ্যে তরমুজে রাসায়নিক এবং ইরিথ্রোসিন-বি (রেড-বি)-র মতো রং দিয়ে ইনজেকশনের প্রবণতা বাড়ছে। এর ফলে তরমুজের রঙ আরও গাঢ় লাল হয়ে যায়, দীর্ঘদিন টাটকা থাকে। মিষ্টিও বাড়ে।'
ভেজাল তরমুজ খেলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
দিল্লির ক্লিনিকাল ডায়েটিশিয়ান কণিকা মালহোত্রা বলেন, ' ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে কৃত্রিমভাবে ফল পাকানো হয়। খুব কমন। এই রাসায়নিক থেকে অ্যাসিটিলিন গ্যাস তৈরি হয়, যার ফলে ফল পেকে যায়। কিন্তু এমন ফল নিয়মিত খেলে তা স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে৷ ক্যালসিয়াম কার্বাইড থেকে নির্গত অ্যাসিটিলিন গ্যাসে ফসফরাস হাইড্রাইড এবং আর্সেনিকের মতো বিপজ্জনক পদার্থ রয়েছে। এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন বমি, দুর্বলতা, ত্বকের আলসার এবং মাথাব্যথা এবং স্মৃতিশক্তি হ্রাসের মতো স্নায়বিক সমস্যা ঘটাতে পারে।'
'রাসায়নিকভাবে ইনজেকশন দেওয়া তরমুজ খেলে বিষক্রিয়া হতে পারে। দীর্ঘ দিন নিয়মিত খেলে লিভার এবং কিডনিকেও দুর্বল করে দিতে পারে,' জানান বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদ।
বাজারে গিয়ে সবাই লাল টুকটুকে তরমুজ খোঁজেন। অনেকে আবার তরমুজ দোকানে দাঁড়িয়েই কাটান। লাল না হলে কেনেন না। এমতাবস্থায় কীভাবে বুঝবেন কোন তরমুজে রঙ মেশানো?
কনিকা মালহোত্রার এর জন্য় কয়েকটি টিপস দিলেন:
একটি তরমুজে এরিথ্রোসিন-বি (রাসায়নিক রঞ্জক) দিয়ে রং করা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য, FSSAI (ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া) একটি সাধারণ টেস্টের বিষয়ে জানিয়েছে। একটি ভিডিও শেয়ার করে ব্যাখা করেছে তারা:
পরিচিত বিক্রেতাদের কাছ থেকে কিনুন: এমন বিক্রেতাদের থেকেই কিনুন যাঁদের সঙ্গে আপনার পূর্ব পরিচিতি রয়েছে।
পর্যবেক্ষণ: রঙ দেখে কীভাবে চিনবেন আগেই বলা হয়েছে। সেটা মেনে চলুন।
টোকা মেরে পরীক্ষা: একটি পাকা তরমুজকে আলতো করে টোকা মারলে ফাঁপা শব্দ হবে।
হলুদ দাগ চেক করুন: তরমুজের নিচের দিকে একটি হলুদ বা কমলা দাগ আছে কিনা দেখুন। এটা ক্ষেতে তরমুজ পাকার লক্ষণ। এই অংশটা মাটিতে থাকে বলে সূর্যালোক পৌঁছায় না। তাই এমনটা হয়। হলুদ দাগ নেই মানে তরমুজ পাকার আগেই তুলে নেওয়া হয়েছে।
সৌজন্যে: তিয়াসা ভাওয়াল, চিফ সাব এডিটর, এডিটোরিয়াল ইন্ডিয়া টুডে টিভি