
POK এর হুনজা উপত্যকা। ভৌগলিকভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম। তবে এই প্রকৃতির ক্যানভাসের আড়ালেই লুকিয়ে এক বড় রহস্য। বলা হয়, এখানকার মানুষ ১০০ বছর, এমনকি ১২০ বছর পর্যন্তও বেঁচে থাকেন। শুধু দীর্ঘায়ু নয়, তাঁদের শরীরও থাকে সুস্থ। খুব কম মানুষই এখানে হার্ট, ডায়াবেটিস বা ক্যানসারে ভোগেন। এটা কীভাবে সম্ভব এই সুস্বাস্থ্য? রহস্য লুকিয়ে এক প্রাকৃতিক তেলে, কড়ি খোবানির তেলে।
কড়ি খোবানির তেল কী?
এই তেল তৈরি হয় খোবানির বীজ থেকে। তাতে থাকে এক বিশেষ উপাদান, যার নাম এমিগডালিন। একে অনেকেই বলেন ভিটামিন বি-১৭। এই উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ বাড়ায়। কিছু গবেষক মনে করেন, এই তেল ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে। যদিও এর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনও পুরোপুরি মেলেনি। তবে হুনজার মানুষ বহু প্রজন্ম ধরে এই তেল ব্যবহার করেন।
কীভাবে ব্যবহার করেন
শরীরে মালিশ করেন নিয়মিত। ঠান্ডা আবহাওয়ায় এই তেল শরীর গরম রাখে। জোড়ার ব্যথা বা মাংসপেশির টানেও এটি আরাম দেয়। অনেকেই বলেন, এই তেল মাংসপেশির ভিতর পর্যন্ত গিয়ে রক্ত চলাচল বাড়ায়। ফলে ব্যথা ও শক্তভাব কমে।
শুধু তাই নয়, এই তেল ত্বক ও চুলের জন্যও আশ্চর্যজনকভাবে উপকারী। এতে থাকে ভিটামিন ই, সি, আর ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড। এগুলি ত্বককে রাখে নরম, উজ্জ্বল ও আর্দ্র। নিয়মিত মালিশ করলে ত্বকে বয়সের ছাপ কমে।
চুলের যত্নেও এই তেল ব্যবহার হয়। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে, ভাঙন কমায়, আর দেয় প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা। অনেকেই সপ্তাহে একদিন খোবানির তেল দিয়ে মাথায় হালকা মালিশ করেন। এতে রক্ত চলাচল বাড়ে, চুল ঘন হয়।
খাওয়ার ক্ষেত্রেও উপকারি
হুনজার মানুষ শুধু শরীরে মালিশই করেন না, খানও এই তেল। সামান্য পরিমাণ তেল সালাদ, দই বা ডালের সঙ্গে মেশান। এর স্বাদ বাদামের মতো। শরীরের ভেতর থেকেও এই তেল শক্তি আর পুষ্টি দেয়।
প্রকৃতির দান
হিমালয়ের কোলে হুনজা উপত্যকা প্রকৃতির আশীর্বাদে ভরা। এখানে বিশুদ্ধ জল, তাজা ফল, আর কড়ি খোবানির তেল, এই তিনেই লুকিয়ে আছে দীর্ঘ জীবনের রহস্য। দামি ওষুধ নয়, প্রকৃতিই তাঁদের দিয়েছে সুস্থ শরীর আর দীর্ঘ জীবন।