
জ্বর খুবই সাধারণ। আবহাওয়ার পরিবর্তন, ভাইরাল সংক্রমণ, অথবা ক্লান্তির কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। অনেকেই চিন্তা না করেই প্যারাসিটামল বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক প্রতিবার জ্বর হলে ওষুধ খাওয়া ঠিক কিনা। বিশেষজ্ঞরা এ সম্পর্কে কী বলেন? জ্বর হল শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে শরীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে তাদের নির্মূল করার চেষ্টা করে। ৯৯-১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর স্বাভাবিক এবং ওষুধ দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে দমন করার প্রয়োজন হয় না। ২০২৫ সালে জার্নাল অফ ইনফেকশাস ডিজিজেসে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, হালকা জ্বর (১০০-১০২ ডিগ্রি) শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। যদি জ্বর ১০৩ ডিগ্রির বেশি হয় বা তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে যে বারবার ওষুধ দিয়ে জ্বর দমন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
প্রতিবার ওষুধ খাওয়া কেন ভুল?
জ্বর আসার সঙ্গে সঙ্গেই মানুষ প্রায়শই প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন খায়, কিন্তু এই অভ্যাসটি সঠিক নয়। এই ওষুধগুলির অতিরিক্ত ব্যবহার লিভার এবং কিডনির ক্ষতি করতে পারে। জ্বরের কারণ না বুঝে ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি জ্বর ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার কারণে হয়, তবে কেবল জ্বর কমিয়ে অসুস্থতা নিরাময় করা যাবে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২৪ সালের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ৬০ শতাংশ মানুষ জ্বরের জন্য ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ খায়। এটি কেবল ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস করে না বরং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও বাড়ায়।
জ্বর হলে কী করবেন?
যদি আপনার হালকা জ্বর থাকে, তাহলে প্রথমে ঘরোয়া প্রতিকার চেষ্টা করুন। প্রচুর জল খান, হালকা খাবার খান এবং বিশ্রাম নিন। শিশুদের ক্ষেত্রে, ১০২ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর ওষুধ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। ভেজা কাপড় দিয়ে মুছলে এবং হালকা পোশাক পরা সাহায্য করে। যদি আপনার জ্বরের সঙ্গে মাথাব্যথা, বমি বা শ্বাসকষ্ট হয়, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। এটি একটি গুরুতর অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে। থার্মোমিটার দিয়ে আপনার জ্বর মাপুন, এবং যদি এটি ১০৩ ডিগ্রির বেশি হয়, তাহলে আপনার ডাক্তারের নির্দেশ অনুসারে ওষুধ খান।
এই টিপসগুলি সাহায্য করবে