
কিডনি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এরা রক্ত পরিশোধন, শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। তবে, অনেকে অজান্তেই কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ ফেলে। কিছু ছোটখাটো অভ্যাস কিডনির দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করতে পারে। যদি সময় মতো এগুলো সংশোধন করা হয়, তাহলে কিডনির স্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব। কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস ধীরে ধীরে কিডনির ক্ষতি করে। সময় থাকতে সচেতন হন।
অতিরিক্ত চিনি
অতিরিক্ত চিনি কেবল রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায় না, সেই সঙ্গে কিডনির উপরও চাপ সৃষ্টি করে, বিশেষ করে যদি কেউ ইনসুলিন প্রতিরোধী বা প্রাক-ডায়াবেটিক রোগী হয়। রক্ত থেকে অতিরিক্ত চিনি ফিল্টার করার জন্য কিডনি দায়ী। ধারাবাহিকভাবে অতিরিক্ত চিনি খেলে রক্তনালীগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং কিডনির কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই, মিষ্টি, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
পর্যাপ্ত জল
জল কিডনিকে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে সাহায্য করে। শরীর জলশূন্য থাকলে কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এটি কিডনিতে পাথর বা মূত্রনালীর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। সারা দিন পর্যাপ্ত জল পান করলে কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
উচ্চ রক্তচাপ
উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের একটি প্রধান কারণ। রক্তনালীতে ক্রমাগত চাপ কিডনির ফিল্টারিং সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অনেকেই উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণও লক্ষ্য করেন না, তাই প্রতিদিন পরীক্ষা করা অপরিহার্য। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণ করুন, মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন, ব্যায়াম করুন এবং প্রয়োজনে ওষুধ খান।
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
কিডনিরও একটি স্বাভাবিক ঘুম-জাগরণ চক্র রয়েছে। ঘুম অপর্যাপ্ত হলে বা ঘন ঘন ব্যাহত হলে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়, যা কিডনির উপর প্রভাব ফেলে। ঘুমের অভাব প্রদাহ, ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। প্রতি রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা মানসম্পন্ন ঘুম কিডনি এবং শরীরের মেরামত প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য।
অত্যধিক নুন
অতিরিক্ত নুন রক্তচাপ বাড়ায়, যা কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করে। প্যাকেটজাত খাবার, টেকআউট এবং টিনজাত পণ্যে প্রায়শই উচ্চ সোডিয়াম থাকে। বাড়িতে তাজা খাবার রান্না করা এবং লেবেল পড়া নুন কমাতে সাহায্য করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী নুন কমানো কেবল কিডনির স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, হৃদরোগের জন্যও উপকারী।
ব্যায়াম না করা
সারাদিন বসে থাকা এবং ব্যায়াম না করা কিডনির উপরও প্রভাব ফেলে। কিডনি সুস্থ রাখতে জগিং, হাঁটা বা সাঁতার কাটার মতো হালকা ব্যায়াম করুন। এটি আপনার কিডনির কার্যকারিতা আরও ভাল ভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
কিডনি সুস্থ রাখতে, চিনি এবং লবণ গ্রহণ সীমিত করুন, প্রচুর জল পান করুন, নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করুন, প্রচুর ঘুমান এবং কিছু ব্যায়াম করুন। এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলি দীর্ঘমেয়াদে আপনার কিডনি সুস্থ রাখতে পারে।