লিভার মানবদেহের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য এই অঙ্গ অপরিহার্য। রক্ত থেকে বিষাক্ত উপাদান ছেঁকে বাদ দেওয়া, বাইল জুস তৈরি এবং মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ—সবই লিভারের দায়িত্বে।
গত কয়েক বছরে লিভার সংক্রান্ত রোগের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। চিকিৎসকদের মতে, এর অন্যতম কারণ অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, খারাপ জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত মদ্যপান। কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাল সংক্রমণও এই অসুস্থতার নেপথ্যে রয়েছে।
লিভারের সমস্যার শুরুতেই যদি তা শনাক্ত করা যায়, তাহলে মারাত্মক জটিলতা এড়ানো সম্ভব। তাই এখনই জেনে নেওয়া দরকার এমন কয়েকটি লক্ষণের কথা, যেগুলো দেখলে অবিলম্বে সতর্ক হওয়া উচিত।
পীতজ্বর বা পিলিয়া
লিভারজনিত সমস্যার প্রথম দিকের একটি লক্ষণ হল পীতজ্বর। এই সময় চোখ ও চামড়া হলদেটে হয়ে যায়। এর অর্থ, লিভারে গণ্ডগোল হলে বিলিরুবিন নামক পদার্থের মাত্রা বেড়ে যায় শরীরে।
সবসময় ক্লান্তি অনুভব করা
যদি আপনি দিনভর কোনও কাজ না করেও ক্লান্ত বোধ করেন কিংবা অস্বাভাবিক দুর্বলতা অনুভব করেন, তবে এটি হতে পারে লিভারের সমস্যার প্রাথমিক ইঙ্গিত। লিভার শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে না পারলে এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
বমি বমি ভাব
নিয়মিত বমি বা বমির ভাব? এই লক্ষণ উপেক্ষা করা ঠিক নয়। এর মানে এমনটাও হতে পারে যে লিভার শরীরের টক্সিন ভালোভাবে প্রক্রিয়াকরণ করতে পারছে না।
খিদে না হওয়া
লিভার হজম প্রক্রিয়া ও বিপাকের(Metabolism) সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তাই এর সমস্যার ফলে ক্ষুধা কমে যেতে পারে। এমনকি অনিচ্ছাকৃতভাবে ওজন কমে যাওয়াও হতে পারে।
গাঢ় রঙের প্রস্রাব
যখন লিভার ঠিকমতো বিলিরুবিন প্রসেস করতে পারে না, তখন প্রস্রাবের রঙ ঘন হলুদ বা বাদামি হয়ে যেতে পারে। এটি নজরে এলেই সতর্ক হওয়া জরুরি।
চামড়ায় চুলকানি
রক্তে পিত্তলবণের পরিমাণ বেড়ে গেলে সারা শরীরে চুলকানি হতে পারে। এটি লিভারের সমস্যার একটি খুবই সাধারণ লক্ষণ।
পেট বা পায়ে ফোলাভাব
লিভার সমস্যা বাড়লে শরীরে ফ্লুইড জমে যেতে পারে। বিশেষ করে পেট বা পায়ে। পেটের ফোলাভাব (অ্যাসাইটিস) কিংবা পায়ের ফোলা (এডিমা)—দুটিই বিপদের ইঙ্গিত।
এই সব লক্ষণ দেখা দিলেই অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ, প্রাথমিক পর্যায়েই সমস্যা ধরা পড়লে লিভারের বড় ক্ষতি আটকানো সম্ভব।