Fatty Liver: ফ্যাটি লিভার ডাক্তারির ভাষায় হেপাটিক স্টিয়াটোসিস নামে পরিচিত। এটি একটি খুবই কমন স্বাস্থ্য সমস্যা। এতে লিভারের কোষে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়। অনেকেই মনে করেন, শুধুমাত্র মদ্যপান থেকেই ফ্যাটি লিভার হতে পারে, কিন্তু এটি পুরোপুরি সঠিক নয়। ফ্যাটি লিভার শুধু মদ্যপানের কারণে নয়, বরং আরও বিভিন্ন কারণে হতে পারে।
ফ্যাটি লিভারের ধরন:
ফ্যাটি লিভারের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে:
- অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার: অতিরিক্ত মদ্যপান লিভারে চর্বি জমার অন্যতম কারণ।
- নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (NAFLD): এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে মদ্যপান না করেও লিভারে চর্বি জমা হয়।
ফ্যাটি লিভারের অন্যান্য কারণ:
নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের (NAFLD) বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন:
- অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা: শরীরে অতিরিক্ত ওজন থাকলে লিভারে চর্বি জমা হতে পারে।
- ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স: ডায়াবেটিস বা প্রিডায়াবেটিস থাকলে লিভার চর্বি জমার ঝুঁকি বাড়ে।
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: বেশি মাত্রায় ফাস্ট ফুড, উচ্চ চর্বি বা সুগারযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে লিভারে চর্বি জমা হয়।
- শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা: পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরে মেদ জমতে পারে, যা লিভারে চর্বি জমার কারণ হতে পারে।
- হরমোনজনিত সমস্যা: থাইরয়েড বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (PCOS) এর মতো সমস্যা থাকলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়ে।
- জেনেটিক ফ্যাক্টর: পারিবারিক ইতিহাস থাকলে ফ্যাটি লিভারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
লক্ষণ ও সমস্যা:
ফ্যাটি লিভারের শুরুতে বিশেষ কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে, তবে পরবর্তীতে ক্লান্তি, পেটের ডানদিকে ব্যথা এবং লিভারের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। অগ্রগতি হলে লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা:
ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ করতে কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে:
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
- সুষম খাদ্য: স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
- শারীরিক পরিশ্রম: নিয়মিত ব্যায়াম ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে সহায়ক।
- মদ্যপান কমানো: মদ্যপান একেবারে না করলে ভালো।
উপসংহার:
ফ্যাটি লিভার শুধুমাত্র মদ্যপানের কারণে হয় না। এটি অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে হতে পারে। তাই, সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।