
পিরিয়ড সব মহিলাদের জন্যই খুব অস্বস্তিকর এবং কষ্টকর একটা ঘটনা। পেটে ব্যথা, গা বমি ভাব,মেজাজের পরিবর্তন হওয়ার পাশাপাশি আরও নানাবিধ সমস্যায় ভুগতে হয় মাসের এই কয়েক দিন। অনেক মহিলার পিরিয়ডের সময় অত্যাধিক কোমর বা পেটে তীব্র ব্যথা, শরীরের অন্যান্য স্থানে ব্যথার সমস্যা থাকে। যার ফলে তাদের রোজকার রুটিন ব্যাহত হয়।
পিরিয়ড নারীদেহে একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। মাসিক চক্র সাধারণত ২১-৩৫ দিন স্থায়ী হয়, যা ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন হয়। যখন একজন নারীর ডিম্বাশয়ের ডিম্বাণু নিষিক্ত হতে ব্যর্থ হয়, তখন শরীর সেগুলোকে বের করে দেয়। এই প্রক্রিয়ার সময় যে অভ্যন্তরীণ আস্তরণ ভেঙে যায়, তা তার সঙ্গে তরল এবং রক্ত নিয়ে আসে, যা রক্তপাত নামে পরিচিত। মহিলারা প্রায়শই তাদের পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত নিয়ে চিন্তিত হন, যার ফলে মাথা ঘোরা বা ক্লান্তিভাব থাকে। জেনে নিন পিরিয়ডের সময় কতটা রক্তপাত হওয়া স্বাভাবিক।
রক্তপাতের স্বাস্থ্যকর পরিসর
হেলথলাইনের মতে, গড় মাসিক রক্তপাত প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিলিলিটার (দুই থেকে তিন টেবিল চামচ)। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে এই সংখ্যাটি ৬০ মিলিলিটার (প্রায় চার টেবিল চামচ) পর্যন্ত হতে পারে। পিরিয়ডের রক্তে শ্লেষ্মা, ফ্যালোপিয়ান টিউবের আস্তরণ এবং অন্যান্য টিস্যুও থাকে, ফলে মোট রক্তপাতকে বেশি দেখাতে পারে। গবেষণা অনুসারে, এতে প্রায় ৩৬ শতাংশ রক্ত এবং ৬৪ শতাংশ অন্যান্য উপাদান থাকে।
কীভাবে অনুমান করবেন?
হেলথলাইনের চিকিৎসকেরা বলছেন, মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করলে কত তরল বের হচ্ছে তা নির্ধারণ করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, যদি মোট তরল ১২০ মিলিলিটার হয় এবং পরীক্ষা করে দেখা যায় এর প্রায় ৩৬ শতাংশ রক্ত, তাহলে এর অর্থ হল ১২০ মিলিলিটারের মধ্যে মাত্র ৪৩ মিলিলিটার রক্ত।
প্যাড বা ট্যাম্পনের ক্ষেত্রে এটি নির্ধারণ করা একটু বেশি কঠিন হতে পারে। তবে প্যাড পরিবর্তনের ফ্রিকোয়েন্সি এবং ট্যাম্পন বা প্যাড কত দ্রুত পূর্ণ হয় তাও একটি সূত্র হতে পারে।
কখন রক্তপাতকে ভারী বলা যায়?
* যখন পিরিয়ডের সময় রক্তের মাত্রা ৬০ মিলিলিটার বা তার বেশি হয় তখন ভারী রক্তপাত বিবেচনা করা যেতে পারে। কিছু প্রতিবেদন বলা হয়েছে, এই পরিসীমা ৮০ মিলিলিটার পর্যন্ত হতে পারে।
* যদি আপনি প্রতি ঘণ্টায় ট্যাম্পন বা প্যাড বারবার পরিবর্তন করতে হয়, বেশি রক্ত জমাট বাঁধে, অথবা রক্তপাত সাত দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে এটি ভারী রক্তপাতের লক্ষণ হতে পারে।
অতিরিক্ত রক্তপাত পর্যবেক্ষণ করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
অতিরিক্ত রক্তপাত আয়রনের ঘাটতি, ক্লান্তি এবং শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণগুলির কারণ হতে পারে। এই লক্ষণগুলি ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়। যদি এসব লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে এটি কোনও অভ্যন্তরীণ সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। তাই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা ভাল।