হৃদপিণ্ড আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি ক্রমাগত রক্ত পাম্প করে শরীরের প্রতিটি অংশে অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছে দেয়। কিন্তু আধুনিক জীবনযাত্রায় মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামের অভাবের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। অনেকেই মনে করেন, হৃদযন্ত্রের যত্ন নিতে বা পরীক্ষা করাতে নিয়মিত হাসপাতালে যাওয়া জরুরি। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, বাড়িতেই কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে নিজের হৃদযন্ত্রের অবস্থা বোঝা এবং যত্ন নেওয়া সম্ভব।
নীচে দেওয়া হল বাড়িতে হৃদযন্ত্র পরীক্ষা ও সুস্থ রাখার তিনটি সহজ উপায়
১. হৃদস্পন্দন পরিমাপ
প্রতি মিনিটে হৃদপিণ্ডের স্পন্দন সংখ্যা (Heart Rate) বা নাড়ি আমাদের হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের একটি বড় নির্দেশক। সাধারণত বিশ্রামের সময় হৃদস্পন্দন প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বিট হয়।
পরিমাপের পদ্ধতি:
তর্জনী ও মধ্যমা আঙুল কব্জির ভিতরের দিকে, বৃদ্ধাঙ্গুলির নিচে রাখুন।
ঘড়ি বা স্টপওয়াচে ১০ সেকেন্ড গণনা করে স্পন্দন গুনুন।
সংখ্যাটিকে ৬ দিয়ে গুণ করুন- এটিই আপনার মিনিট প্রতি হৃদস্পন্দন।
যদি এটি ১০০-এর বেশি বা ৬০-এর কম হয়, তবে মানসিক চাপ বা হৃদরোগের ইঙ্গিত হতে পারে। নিয়মিত এই পরিমাপ করলে হৃদযন্ত্রের পরিবর্তন সময়মতো বোঝা সম্ভব।
২. সিঁড়ি পরীক্ষা
হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস কতটা কার্যক্ষম, তা যাচাইয়ের সহজ উপায় হলো ‘সিঁড়ি পরীক্ষা’।
পদ্ধতি: স্বাভাবিক গতিতে প্রায় ৪ তলা বা ৬০ ধাপ সিঁড়ি বেয়ে উঠুন।
ফলাফল বিশ্লেষণ: যদি ৯০ সেকেন্ডের কম সময় লাগে এবং শ্বাসকষ্ট না হয়, তাহলে হার্ট সাধারণত ভালো অবস্থায় রয়েছে।
যদি বুক জ্বালাপোড়া, ব্যথা বা মাথা ঘোরা অনুভব করেন, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৩. স্মার্ট ডিভাইস ও অ্যাপ ব্যবহার
বর্তমানে প্রযুক্তির সাহায্যে নিজের হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা আরও সহজ হয়েছে। স্মার্টওয়াচ বা ফিটনেস ব্যান্ডে থাকা সেন্সর হৃদস্পন্দন পরিমাপ করে, কিছু উন্নত ডিভাইস অনিয়মিত হৃদস্পন্দনও শনাক্ত করতে পারে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
অ্যাপে নিয়মিত রক্তচাপ, ওজন, ব্যায়াম ও ওষুধের তথ্য রেকর্ড রাখুন। প্রয়োজনে সেই তথ্য চিকিৎসকের সঙ্গে শেয়ার করুন। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই অ্যাপ বা ডিভাইস চিকিৎসা পরীক্ষার বিকল্প নয়। যদি কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।