বর্ষায় মূত্রনালীর সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI) অনেকটাই বেশি দেখা যায়, বিশেষত মহিলাদের মধ্যে। এই ঋতুতে অতিরিক্ত গরম ও জলশূন্যতার কারণে শরীরের স্বাভাবিক কার্যপ্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে, যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। চিকিৎসক ও গবেষকদের মতে, প্রতি দুজন মহিলার মধ্যে অন্তত একজন জীবনের কোনও না কোনও পর্যায়ে ইউটিআই-র শিকার হন। নীচে UTI বেড়ে যাওয়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ তুলে ধরা হল:
১. জলশূন্যতা (Dehydration)
গরমে বা বর্ষায় ঘাম বেশি হয়, অথচ অনেকেই পর্যাপ্ত জল খান না। ফলে শরীরের জলস্তর কমে যায় এবং প্রস্রাবের পরিমাণও কমে। কম প্রস্রাব মানে মূত্রনালীর ভিতরে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া সহজে বেরিয়ে যেতে পারে না, এতে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে।
পরামর্শ: দিনে অন্তত ৬-৮ গ্লাস জল পান করুন।
২. প্রস্রাব চেপে রাখা
অনেকেই দীর্ঘ সময় প্রস্রাব আটকে রাখেন, যা গ্রীষ্মে বিশেষ করে বিপজ্জনক হতে পারে। এতে মূত্রাশয়ে ব্যাকটেরিয়া জমে এবং সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
পরামর্শ: প্রস্রাব চেপে না রেখে সময়মতো মূত্রত্যাগ করা অত্যন্ত জরুরি।
৩. টাইট বা সিনথেটিক পোশাক পরা
গ্রীষ্মে টাইট জিন্স বা সিন্থেটিক আন্ডারওয়্যার পরলে যোনিপথ ঘেমে যায় এবং বাতাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
পরামর্শ: ঢিলেঢালা, হালকা সুতির পোশাক ব্যবহার করুন।
৪. গর্ভাবস্থা (Pregnancy)
গর্ভাবস্থায় মূত্রনালীর উপর ভ্রূণের চাপ পড়ে এবং শরীরের হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
৫. মেনোপজের পরবর্তী সময় (Post-Menopause)
মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যায়, যার ফলে মূত্রনালীর ত্বক পাতলা ও দুর্বল হয়। এতে ব্যাকটেরিয়া সহজেই প্রবেশ করতে পারে।
UTI হলে যেসব উপসর্গ দেখা দেয়:
প্রস্রাবে জ্বালা বা ব্যথা
ঘন ঘন প্রস্রাবের অনুভূতি
প্রস্রাবে দুর্গন্ধ
প্রস্রাবে রক্ত বা সাদা কণা
তলপেটে চাপ বা অস্বস্তি