Advertisement

Woman Heart Attack Prevention Tips: 'নাচের মঞ্চেই থেমে গেল ২৪-এর তরুণীর জীবন, মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ছে, কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?

Woman Heart Attack Prevention Tips: প্রথমে সবাই ভাবল, হয়তো ক্লান্তির কারণে অজ্ঞান হয়ে গেছেন। কেউ কেউ হাসছিলেন, কেউ জল ছিটোচ্ছিলেন, কেউ আবার ডাকছিলেন, "পরিণীতা! ওঠো!" কিন্তু কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। চিকিৎসকরা জানালেন—তিনি আর নেই। মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ হারালেন!

'নাচের মঞ্চেই থেমে গেল ২৪-এর তরুণীর জীবন, মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ছে, কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?'নাচের মঞ্চেই থেমে গেল ২৪-এর তরুণীর জীবন, মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ছে, কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 11 Feb 2025,
  • अपडेटेड 12:40 AM IST

Woman Heart Attack Prevention Tips: মধ্যপ্রদেশের বিদিশায় এক বিয়ের আসরে আলো-ঝলমল আনন্দে মুখরিত উৎসবে খুশির হাওয়ায় উড়ছিলেন ২৪ বছরের পরিণীতা, তাঁর দিদির বিয়ের আনন্দে মেতে উঠেছিলেন নাচের মঞ্চে। কিন্তু সেই আনন্দ মুহূর্তেই বিষাদে পরিণত হলো। প্রাণবন্ত নাচের মাঝেই তিনি আচমকা মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন।

প্রথমে সবাই ভাবল, হয়তো ক্লান্তির কারণে অজ্ঞান হয়ে গেছেন। কেউ কেউ হাসছিলেন, কেউ জল ছিটোচ্ছিলেন, কেউ আবার ডাকছিলেন, "পরিণীতা! ওঠো!" কিন্তু কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। চিকিৎসকরা জানালেন—তিনি আর নেই। মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ হারালেন!

এই ঘটনার ভিডিও মুহূর্তের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। হাসি-আনন্দে নাচতে থাকা এক তরুণীকে সবাই দেখেছিল, কিন্তু কেউ ভাবেনি যে সেই মুহূর্তই তাঁর জীবনের শেষ হবে।

আরও পড়ুন

মহিলাদের মধ্যে কেন বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি?
অনেকদিন ধরেই ধারণা ছিল, হার্ট অ্যাটাক সাধারণত পুরুষদের বেশি হয়। মহিলাদের, বিশেষত মেনোপজের আগে, এই ঝুঁকি কম থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই ধারণা এখন পুরনো। বদলে গেছে জীবনযাত্রা, বদলেছে খাদ্যাভ্যাস, বেড়েছে স্ট্রেস। আর সেই সঙ্গেই বেড়েছে মহিলাদের হৃদরোগের ঝুঁকি।

সফদরজং হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ প্রীতি গুপ্তা বলেন,
"মহিলাদের হৃদরোগ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। মেনোপজের পর তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি পুরুষদের সমান হয়ে যায়, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, অনেক তরুণীও আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকেই বুঝতে পারেন না যে তাঁদের হার্টের সমস্যা আছে, কারণ মহিলাদের লক্ষণগুলো পুরুষদের তুলনায় ভিন্ন হয়।"

কেন হচ্ছে এমন আকস্মিক মৃত্যু?

ফর্টিস হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ উদগিথ ধীর জানান,
"পুরুষদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ বেশ স্পষ্ট—বুকে ব্যথা, বাম হাতে ব্যথা, হাঁসফাঁস ভাব। কিন্তু মহিলাদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলো অনেকসময় ভিন্ন হয়। ক্লান্তি, বমিভাব, নিঃশ্বাসের কষ্ট, ঘাড় বা পিঠে ব্যথা—এসবও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। কিন্তু অনেকেই এগুলো গ্যাস্ট্রিক বা সাধারণ দুর্বলতা বলে এড়িয়ে যান, যা মারাত্মক ভুল।"

Advertisement

হার্ট অ্যাটাকের কারণ কী?
আজকের দিনে মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ানোর প্রধান কারণগুলো হল—

১. চরম মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
পারিবারিক দায়িত্ব, কর্মজীবনের চাপ, সমাজের প্রত্যাশা—এসবের ভার বইতে গিয়ে মহিলারা প্রতিদিন প্রচণ্ড মানসিক চাপে থাকেন। স্ট্রেস শরীরে কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে দেয়, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে হার্টের ক্ষতি করে।

২. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন
প্রসেসড ফুড, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, কোল্ড ড্রিংকস—এসব ধীরে ধীরে হৃদযন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়। খাবারের প্রতি অসচেতনতা হৃদরোগের অন্যতম কারণ।

৩. উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস এখন ঘরে ঘরে দেখা যায়। এটি হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেয় এবং ধমনীতে চর্বি জমিয়ে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে।

৪. ধূমপান ও বায়ুদূষণ
সিগারেট, অ্যালকোহল হার্টের বড় শত্রু। মহিলাদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বাড়ছে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর সঙ্গে বায়ুদূষণের যোগও কম নয়—পিএম ২.৫ এর মতো ক্ষতিকারক কণাগুলি ধমনীতে প্রদাহ সৃষ্টি করে হৃদরোগের কারণ হতে পারে।

কীভাবে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করা সম্ভব?

১. সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
২.বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল খান।
৩.ফাস্টফুড, অতিরিক্ত লবণ ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
৪. পর্যাপ্ত জল পান করুন।
৫. নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
৬. প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা যোগব্যায়াম করুন।
৭. বসে থাকা কমান, একটু পরপর শরীর নড়াচড়া করুন।
৮. ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন
৯. ধূমপান পুরোপুরি বন্ধ করুন।
১০. অ্যালকোহল পরিহার করুন, কারণ এটি রক্তচাপ বাড়িয়ে হার্টের ক্ষতি করে।
১১. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
১২. অতিরিক্ত ওজন থাকলে ধীরে ধীরে কমান।
১৩. শরীরে মেদ বাড়লে হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ পড়ে।
১৪. স্ট্রেস কমান
১৫. মেডিটেশন, যোগব্যায়াম করুন।
১৬. ভালো বই পড়ুন, পছন্দের মিউজিক শুনুন, প্রকৃতির কাছে যান।
১৭. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান
১৮. ব্লাড প্রেসার, সুগার ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা করুন।
১৯. যদি কোনও সমস্যা থাকে, তাহলে আগে থেকেই চিকিৎসা নিন।
২০. সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন

পরিণীতার মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। হার্ট অ্যাটাক যে শুধু বয়স্কদের হয় না, তা আমরা বারবার দেখছি। তাই শরীরের যে কোনো পরিবর্তন বা অস্বস্তিকে অবহেলা করা যাবে না। জীবনযাত্রায় স্বাস্থ্যকর অভ্যাস আনতে হবে। স্বাস্থ্যই সম্পদ—এ কথা যেমন সত্যি, তেমনই সত্যি, সচেতনতা বাঁচাতে পারে একটি প্রাণ।

 

Read more!
Advertisement
Advertisement