স্বামী-স্ত্রীয়ের সম্পর্ক খুবই সূক্ষ্ম সুতোয় বাঁধা থাকে। উভয়েরই দায়িত্ব এই সুতোকে শক্ত করে ধরে রাখা। দু'জনেই দু'জনের প্রতিটি ভাল এবং খারাপ সময়ে পাশে থেকে, অপরজনের স্বপ্ন সক্ষম করতে এবং জীবনে সফল হতে সাহায্য করা জরুরি। বলা হয় যে, দাম্পত্য জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় অর্থের অভাব এবং যৌনতার কারণে। তবে এটাই একমাত্র কারণ নয় যা, গড়তে বা ভাঙতে পারে।
কখনও কখনও সঠিক কথোপকথন, মনোভাব এবং সঙ্গীর প্রতি অবিশ্বাসের মতো বিষয়গুলিও দাম্পত্যে ফাটল তৈরির কারণ হতে পারে। আজীবন স্বাস্থ্যকর, সুখী, রোম্যান্টিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য, একটা সম্পর্কে সাধারণ সমস্যাগুলি একেবারে গোড়া থেকে চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ। নয়তো একটা ছোটো সমস্যাও প্রথম বিরোধ, ও পরে বিবাহবিচ্ছেদের কারণও হতে পারে।
প্রত্যেকের জীবনে একটি সময় আসে যখন একজন ব্যক্তির মাঝে মাঝে বুঝতে সমস্যা হয় যে, তার নিজের অভ্যাস সম্পর্কের তিক্ততার কারণ হতে পারে। এমন কিছু অভ্যাস থাকে মানুষের যা, সম্পর্কের মধ্যে দূরত্বের কারণ হয়ে উঠতে পারে এবং এই অভ্যাসগুলি যদি আপনার বা আপনার সঙ্গীর মধ্যে থাকে, তবে এই অভ্যাসগুলি ত্যাগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
কমিউনিকেশন গ্যাপ
আপনার এবং আপনার সঙ্গীর মধ্যে যদি 'কমিউনিকেশন গ্যাপ' অর্থাৎ খারাপ যোগাযোগ থাকে, বা দু'জনে একে অপরের সঙ্গে সঠিকভাবে কথা না বলেন, তাহলে এই অভ্যাস দাম্পত্যে নিঃসন্দেহে দূরত্ব বাড়াবে। যদি খারাপ যোগাযোগের কারণে অপরিচিত, অপমানিত বা বিচ্ছিন্ন বোধ করেন যে কোনও একজন, তাহলে সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হওয়া অসম্ভব।
সঠিক যোগাযোগের অনেক ধরণ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, যে তিনি সত্যিই কেমন অনুভব করেন। সঙ্গীকে নিজের অনুভূতির কথা জানাতে না পারলে, ছোট ছোট সমস্যা তৈরি হয় এবং ধীরে ধীরে তা দূরত্ব তৈরি করতে পারে। যা অন্তত প্রত্যাশিত সময়ে বড় ঝামেলায় পরিণত হতে পারে।
বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ
আমাদের সমাজে প্রায়ই প্রতিটি সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানুষের হস্তক্ষেপ থাকে। কিন্তু কখনও কখনও বাইরের লোকের হস্তক্ষেপ আপনার বিবাহিত জীবনে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। জেনে অবাক হবেন, বাবা- মা, বন্ধু-বান্ধব বা এমনকী সন্তানও আপনার বিয়ের উপর অযাচিত প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ যখন কোনও তৃতীয় ব্যক্তি জেনে বা অজান্তে কোনও দম্পতির সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে, তখন এটি বিরোধ এবং অনেক ভুল সিদ্ধান্তের দিকে নিয়ে যেতে পারে। যা, দম্পতির নিজেদের ইচ্ছে এবং পছন্দের বিপরীত হতে পারে। তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি আস্থা হ্রাস করতে পারে। যদি একজন মনে করেন যে, তার মতামত এবং পছন্দগুলি ক্রমাগত উপেক্ষা করা হচ্ছে, তাহলে সে তার জীবনসঙ্গীর প্রতি অনাগ্রহী হতে পারে।
বিশ্বাসের অভাব
বিশ্বাস প্রতিটি সম্পর্কের ভিত্তি। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর সন্দেহ বা স্বামীর প্রতি স্ত্রীর সন্দেহ দীর্ঘ সময়ের জন্য সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা তৈরি করতে পারে। এটি একটি সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য মোটেও ভাল না। এই মনোভাব বদলানো জরুরি। সঙ্গীকে বিশ্বাস করুন এবং কোনও সমস্যা দেখা দিলে, মন খুলে কথা বলুন। অন্যদের উপর অপ্রয়োজনীয় সন্দেহ সেই ব্যক্তির মধ্যে বিরক্তি তৈরি করতে পারে যা, সম্পর্কে আরও ফাটল তৈরি করতে পারে।