আর্থ্রাইটিস (Arthritis) বা বাত জয়েন্ট সংক্রান্ত একটি রোগ। এর মধ্যে রয়েছে ব্যথা, ফোলাভাব বা শক্ত হয়ে যাওয়া। যদিও আর্থ্রাইটিস ৫০ বছরের বেশি বয়সি বয়স্ক লোকজনের মধ্যে দেখা দেয়, এই রোগটি এখন বছর তিরিশের লোকজনের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের (Rheumatoid Arthritis) ক্ষেত্রে ৫ বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়।
আর্থ্রাইটিস দুই প্রকার। প্রথমটি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, এটি অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস, লুপাসের মতো প্রদাহের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা হাড়ের ক্ষয়কারী। দ্বিতীয় প্রকারটি হল অস্টিওআর্থারাইটিস, যা একটি সাধারণ ধরনের আর্থ্রাইটিস, যা সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে।
গুরুগ্রামের ফোর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট-র সিনিয়র কনসালটেন্ট-রিউমাটোলজি নেভাল মেন্দিরাত্তা (Naval Mendiratta) জানিয়েছেন, উপসর্গ দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগ নির্ণয় করা উচিত। তিনি বলেন, 'রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস অল্পবয়সী লোকেদের মধ্যে দেখা যায়, এমনকি ৫ বছর বয়সি বাচ্চারাও এই ধরণের আর্থ্রাইটিসের শিকার হতে পারে। সাধারণ উপসর্গগুলি হল-ব্যথা। এছাড়াও কব্জি, কনুই, কাঁধ এবং হাতের জয়েন্টগুলি ফুলে যাওয়া।'
অনেক লোকজনের সকালে সমস্যা হয়। ঘুম থেকে ওঠার পর তাদের হাত দ্রুত কাজ করে না। মেদিরাত্তা বলেন, 'যখন আপনি এই উপসর্গগুলি দেখতে পাবেন, তখনই আপনার একজন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। অনেকের মুখও ফুলে যায়। রোদের কারণে চুল পড়ে এবং মুখে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। এছাড়াও মুখ এবং চোখ শুষ্ক হয়ে যায়।' তিনি আরও বলেন, 'অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসে পিঠে প্রচণ্ড পিঠে ব্যথা হয়, বিশেষ করে রাতে। এমনকি সকালে ঘুম থেকে উঠতেও অসুবিধা হয়। এই ধরনের আর্থ্রাইটিস মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের বেশি প্রভাবিত করে। হাঁটুর আর্থ্রাইটিস ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, রাতে ব্যথা হতে পারে। একে অস্টিওআর্থারাইটিস বলা হয়।'
বাতের ব্যথা কমাতে এই উপায়গুলি কাজে লাগতে পারে:
রোগ নির্ণয়: উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে রোগ নির্ণয় করুন। আপনাকে বুঝতে হবে যে প্রতিটি ধরণের আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসা আলাদা। প্রতিটি ব্যক্তির বিভিন্ন ধরণের ওষুধও থাকবে।
ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা বন্ধ: খুব বেশি ব্যথানাশক ব্যবহার করবেন না। কারণ তা কিডনিকে প্রভাবিত করে। বাতের জন্য এখন জৈবিক ইনজেকশন ব্যবহার করা হচ্ছে। জয়েন্টগুলি যাতে বেঁকে না যায়, তার জন্য এটি একটি উন্নত চিকিৎসা। রোগ নির্ণয়ের ৬ মাসের মধ্যে চিকিৎসা করা উচিত।
সচেতনতা তৈরি করা: এই রোগ থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভাল উপায় হল সচেতনতা তৈরি করা। যদি আপনি উপসর্গ দেখতে পান তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগ নির্ণয় করুন। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা হলে কাজ হবে।
কোনও আয়ুর্বেদিক ওষুধ নয়: জয়েন্টে ব্যথার জন্য আয়ুর্বেদিক সমাধান এড়িয়ে চলতে হবে।